Posts

Showing posts from July, 2007

:: বৃষ্টি পিয়াসি আমি আর শাহানা ::

বৃষ্টির দিন ছিল, রাতেও ছিল বৃষ্টি। আমাদের মাঝে যাদের বৃষ্টি প্রীতি ছিল তারা ছাড়া আর সবাই বিরক্ত। টানা বৃষ্টি কারইবা ভালো লাগে। আমি বৃষ্টি পিয়াসি মানুষ। মেঘ আমায় মাতাল করে। আমি মেঘের ছায়ায় দাঁড়াতে পছন্দ করি। বৃষ্টিতে ভিজি বালক বেলার উল্লাসে। শাহানার সাথে দেখা হয়। সেও বৃষ্টিময় দুপুরে। আমি হাটছিলাম কংক্রিটের রাস্তায়। মানুষের সাথে মানুষের সহজে ঘেষাঘেষি হয়না এমন রাস্তা। তবু হঠাৎ কেউ একজন আমার শরীরে হামলে পড়ার মতই আচরণ করে। সামলে নিয়ে তাকাই। শাহানা! বদলে যাওয়া শরির নিয়ে দাড়িয়ে আছে আমার সামনে। শাহানা, আহা শাহানা। আমার নিঃশ্বাসের মত প্রিয় ছিলে তুমি। আমার বুকে তোমার জন্যই জমে আছে গাঢ় এক বেদনা। শাহানাদের পুকুরে শানবাঁধানো ঘাট ছিল, তাদের তিন মহালা বাড়ি ছিল। আমি সেই বাড়িতে কতবার গিয়েছি। গ্রাম থেকে উঠে আসা নিতান্ত এক কিশোরের জন্য সে বাড়ি ছিল আরামদায়ক নিঃশ্বাসের মত। সে বাড়িতে শাহানা ছিল। শাহানার সাথে দেখা হলে মেঘ মেঘ দুপুরে সে আমাকে নিয়ে পাশের ষোলতলা বাড়িটার দিকে হাঁটা দেয়। আমি কোন কথা না বলে তাকে অনুসরণ করি। আর অবচেতন মনে চাপা ফুলের ঘ্রাণ খুঁজি। শাহানার কাছে গেলে সেই কৈশোরে আমি চাপা ফুলের ঘ্রা

:: মেঘ মেঘ দিনে বেলাদি ::

মেঘ মেঘ দিনে আমি আবারও ফিরে যাই হাওরপারের শৈশবে,আমি তখন আমি ছিলামনা ছিলাম জলের সন্তান এক, আমার পায়েরসীমানায় ছিল কোমল পলির বিস্তার, চোখের ছিল অবাধ স্বাধীনতা,আমি তখন আমি ছিলামনা ছিলাম মাটির সন্তান। বৃষ্টি ধোঁয়া সকাল ও দুপুরে আমি বারবার বেলাদির কাছে ফিরে যাই বেলাদির মেঘবর্ন চুলের আশ্চর্য ঘ্রান আমায় আচ্ছন্ন করে আমি সারি সারি কদমের ভেজা শরিরে শৈশব খুঁজে পাই, আমি আমার লাটিম খুঁজে পাই বৃষ্টির বিকেলে আমি চোখ খোলা রেখেও বিভোর হই। বেলাদির হাত আমার আবিন্যাস্ত চুলে বিল কেটে বলে, যা অপু নলুয়ার হাওরের জলে মিশে যাওয়া আকাশের কার্নিশে জেগে ওঠা রঙধনু থেকে সিঁদুরের মত একটুকরো লাল রং নিয়ে আয়, আমি কপালে পরব...

:: সন্যাসে তোমাদের এতই ভয়, আতিপাতি করে বুকে আমার জন্য ভালবাসা ::

Image
সেইযে বালিকা ছিল এক, দুই বিনুনি ছিল চুলে তার। আমি কতকতবার তারে মন থেকে মুছে ফেলি আর সে বারংবার থেকে যায় আমার মনে। আমার শুধু চোখে ভাসে মনে ভাসে রমনীর সিঁথির মত মাঠের বুকে জেগে ওঠা হাটাপথে দুজনে আমারা দুজনকে আলতো পায়ে পেছনে রেখে হাটতে শুরু করলে হঠাৎ হঠাতই সে পেছন ফিরে প্রশ্ন করেছিল, কোথায় যাবে এখন... মনে অমন তোফানতোলে এমন প্রশ্ন আমায় কেউ আর কোনদিন করেনি তবে কেন আমি সেই দুই বিনুনির কথা ভুলে যাব তবে কেন আমি সেই রমনীয় সিথির সবুজ মাঠকে ভুলে যাব তবে কেন আমি সেই মায়াময় চোখ থেকে পালিয়ে বেড়াব নদীবর্তি সেই করুনা আমায় আর কতবার পোড়াবে যতটা না পোড়ালেই নয় ততটাতো আমি আগেই পুড়েছি তবে কেন আজ এইসকল পাথুরে আয়োজন! আজ কেন সকল প্রিয় মানুষ ভালবাসা নিবেদিতে আমারে এমন করে তুলে উচাটন। আজ কেন আমি আর আগের মত পুরনো সেই নদীবন্দরের খেয়াঘাটে বসা ছোট দাদার মত সাদা চোখ মেলে সন্যাসের কথা বলতে পারিনা

:: অর্না বন্ধু আমার ::

Image
সে বড় মায়াবতী ছিল। সে ছিল ছায়াময় বৃক্ষের মত। আমার যত অপরাধ কতদিন আগলে রেখেছে বন্ধু আমার। আমার কত নাঁকি কান্না মুছে দিয়েছে মমতায়। আমি আর কত কাঁদতাম যতটা কাঁদিয়েছি তারে! আমাদের শৈশবে কত বেলীফুল আর গোলাপের পাপড়ি ছড়ানো ছিল উঠোনে উঠোনে। আমরা হেটেছি ছায়ায় ঢাকা কত কত পথ। আমরা মায়ায় বেধেছি আমাদের কত কত শৈশব। এখনও আমাদের পথগুলো আগেরই মত আছে, আমরা তবু হাটি অন্য পথে, অন্য আগুনে পুড়ি আর দুর থেকে বলি ভাল থাকিস।

:: তখনও ঝরেনি পাতারা, বেলাদি ছিল ::

Image
বেলাদির মাথায় একরাশ ঘনকালো চুল ছিল। রাজের বিস্ময় মাখানো একজোড়া চোখ ছিল তার। তখন অবশ্য অতটা বুঝতামনা। শুধু চোখ গুলো দেখতে আমার ভিষন ভালো লাগত। আমাদের বাড়ির উত্তর সীমানায় ছিল একসারি কদম গাছ। তার পরই শুরু বেলাদিদের বাড়ি। সীমানা থেকে ঘর অবধি যেতে বেশ লম্বা একটা ফাঁকা যায়গা ছিল। মখমলের মত বিছানো সবুজ সবুজ সেই ঘাসের মাঝখানে ছিল বেশ বড় একটা পাথর। অনেকটা বেদীর মত। সাদা রঙের সেই পাথরে বসে রোজ বিকেলে বেলাদি রবীন্দ্রনাথের বই পড়ত। মাঝে মাঝে সুনীল। রোজ বিকেলে আমরা সব বালকের দল সেই ফাঁকা যায়গায় খেলা করতাম। গোল্ল্লাছুট খেলা হত। পাথরের সেই বেদীটাকে কেন্দ্র ধরে আমরা ঘুরে ঘুরে ছড়া বলে একসময় দিতাম ভু দৌড়। আমরা আসলে বেলাদিকে ঘিরেই ছড়া কাটতাম। এটা একেবারেই আমার বালক বেলার কথা। ওই বয়েসে আমরাতো আর দুরে কোথাও যেতে পারতামনা। তবে আস্তে আস্তে আমাদের দৌড় বড় হতে থাকে। বেলাদিকে ঘিরে ছড়া বলার সময় ফুরুতে থাকে। গ্রামের শেষে যে মাঠ, তারও পরে যে পরিত্যাক্ত জমিদার বাড়ি। সেইসব গলিঘুপচিতে ভাগ হতে থাকে আমাদের শৈসব। কনক, নিলু, রাজু সবাই খুব সহজেই রোজ রোজ চলে যেত সেইসব অচেনাকে চিনতে। আমার যাওয়া হতনা। কি এ

:: সময়, ইদানিং ::

Image
সময় বড় সংক্ষিপ্ত এখন বামুন-বনসাই জামানা। উদ্যানে বিপনী বিতান পেটের ভেতর মিনি চিড়িয়াখানা। প্রকৃতির উৎসবে মুঠোফোন বাণিজ্য। শর্ট ম্যাসেজ; ঘন্টা বাজে: চিঠির মৃত্যু। এখন আধুনিক রিমিক্স হাছন, কান ঝালাপালা করে ডিজিটাল ফিউশন।

:: সেইসব সময় অথবা তুমি বিষয়ক অথবা কিচ্ছুনা ::

Image
আমার তখন না ঢাকা না সিলেট অবস্থা! আরিফ ভাই, নিজের ভাই, রনি ভাই এমনতর ভাই এবং সঙ্গিয় গৌরী, চেরী, রাজুরা প্রায় প্রতিদিন টানছেন মহানগরের দিকে। সেখানে নাকী আছে আমার জন্য অবারিত প্রান্তর। আমার সকল প্রতিভা(!) বিকষণে সেই নগরীই হবে প্রকৃষ্ট স্থান! এদিকে প্রাণের শহরে আছেন জননী আমার, আছেন শিশুমনের পিতা। আছে আমার প্রান্তিক। আছে সবুজ ঘনবন, জাফলং টাঙ্গুয়া...। আছে অর্ণা নামের এক মানবী!!! সাথে সাথে আমারই মত বিষয় বুদ্ধিহীন একদঙ্গল বালক বালিকা!!! ঘরে আবার মাঝে মাঝে কানাঘুষা হয়। সাতসমুদ্র তের নদীর পারের নিকটজনেরা বলেন, চলে আস জাদুধন, পাবে সফেদ স্নেহ আর স্নো...। এমন এক সময় শহর সিলেটে কতিপয় মানুষ দাড় করাতে চায় পত্রিকা। আমাদের টুকুদা তখন যে কোনভাবেই আমাকে ধরে রাখতে চান শহর সিলেটে! আমি বলি তাইলে একটা চাকরি দেন। বেকার হয়েত আর থাকতে পারিনা! তিনিই খবর জানান সেই পত্রিকার। বিজ্ঞাপনও জোগাড় করে নিয়ে আসেন তখনকার ঘরবাড়ি প্রান্তিকের টিনশেড বারান্দায়। অর্ণাতো মহা খুশি। আমাকে বুঝায়, সবাই চলে যাক, আমরা দুই বন্ধুতে এই শহরকে আগলে রাখব!!! সেই বালিকা এখন নগর ছেড়ে বৈদেশের পথে পথে ঘুরে ইচ্ছেমত!!! চাকরিটা হয়ে যায়। আমিও পড়ি স