Posts

Showing posts from February, 2008

আজ এইটুকুই সুখ সংবাদ

নিঃশ্বাস বুঝি আটকে যায়। বন্ধ হয়ে যায় একে একে সব চেনা দরজা, জানালা। গতকাল সন্ধায় আবার নাটকের সভা হয়েছে গরম চায়ে মজেছি আমরা পাগলের দল। এইবার তবে মহড়া। ধুপ জ্বেলে পূনর্বার যাত্রা... ইদানিং যিনি এই শহরের বারো জনের একজন তিনি এসেছিলেন, নতুন গাড়ি তার ঝা চকচক সংস্কৃতির এমন বেহাল দশায় তিনি ব্যাথিত, কান্না পায় তার। আমরা আপ্লুত হই ভালবাসায়। ঝুলে পড়তে ইচ্ছে করে গলায়। আপনি সংস্কৃতির আব্বা হবেন এইবার। আসেন গলায় মালা পরেন জনাব বলে নৃত্য করতে ইচ্ছে করে। কিন্তু কিছুই করা হয়না। শুধু ডালপুরি চিবুই। শুধু চা গিলি আর আগামীকাল কফি পাওয়া যাবে এই আশাবাদ শুনি। তিনি এই শহরের বারো জনের একজন তাই তাকে গুরুত্ব দিতেই হবে। তার কথা মন দিয়ে শুনি। যতযাই হোক, আসল কথা হল জানালা বন্ধের জামানা এসে গেছে। নিঃশ্বাস বন্ধ হলে হবে জানালা খোলা যাবেনা দরজাটা একটু ফাঁক করে প্রয়োজন মতো শুধু বলতে হবে ভাল আছি খুব, সুখে আছি। সময়মত টিভি ক্যামেরা পৌছে যাবে আপনার দরজায়। শোক বলবেননা ভুলেও পোষাক পরা ফেরেশতারাও কিন্তু বসে নেই।

বউ বাটা বলসাবান: বিস্মৃত বয়ান

বেশি বেশি ভাব বলে একটা কথা আছে। আমরা প্রায়ই এই কথাটা বলি, পাব্লিকের বেহুদা আচরনকে বুঝাতে। এই মূহুর্তে আমি সেরকম একটা বেহুদা আচরণ অর্থাত্ বেশি বেশি ভাবের কাজ করব। কাজটা আসলে করার কোন কু-ইচ্ছা কখনই আমার ছিলনা। কিন্তু শিমুলিয় অনুরোধে এটা করতে বসলাম। তাছাড়া বেকার দ্যা গ্রেট হিসাবে একটা কাজ অন্তত পাওয়া গেল। বিষয় হল বউ বাটা বলসাবান নামের অতি ক্ষুদ্র গল্পের জন্ম কাহিনী। সবকিছুর একটা সময় আছে। যার জীবনই পাকাপোক্ত হলনা তার আবার জীবনী কি? বউ বাটা বলসাবান কতটুকু গল্প হয়ে উঠতে পেরেছে এই প্রশ্নটারই কোন উত্তর আমার জানা হয়নি আর তার কীনা জন্ম কাহিনী! তবু লিখি। এইসব অবাধ লেখার স্বাধীনতা আছে বলেইতো ব্লগ। হিসাব করলে দশ বছর হয়ে গেছে। এই মূহুর্তে ছাপানো কপিটা হাতের কাছে নেই। থাকলে সেই তারিখটা দেখে নিশ্চিত সময় বলতে পারতাম। সেইসময় সবে আমরা লেখা গুলে খাবার বয়েসে পৌছেছি। নিজেরাই লিখি, নিজেরাই খাই টাইপ অবস্থা। সিলেটে বেশ বড় একটা গ্রুপ আমাদের। আকাম কুকাম অনেক কিছুই করি আমরা। এর ফাঁকে কেউ নাটক করে, কেউ আবৃত্তি করে। আর সব বাঙালির কমন বদদোষ হিসাবে আমরা সাহিত্য চর্চ্চাও করি। গৌরীশ দারুন প্রবন্ধ লিখত। তার পড়ার বিষয় ছি

কয়েকটা দিন অন্যরকম-শেষ

রোববার, ৩ ফেব্রুয়ারি। মেলা নিয়ে আমার অনেক স্মৃতি। শৈশবের বড় একটা সময় আমি মেলায় মেলায় ঘুরেছি। রঙিন সেইসব মেলা। ধল মেলা ( এই মেলাটা বাউল সম্রাট আব্দুল করিমের জন্য বিশেষ ভাবে পরিচিত), মাতারগাওয়ের মেলা, জগন্নাথপুরের বারুনি, ঢাকাদক্ষিনের রথের মেলা বা বারুনি (শ্রী চৈতন্যের স্মৃতি বিজড়িত) আরও কত। এই গতবারই ঘুরে এলাম পনাতির্থ থেকে। আমার জীবনটা নানা রঙে রাঙাতে এইসব মেলার ভূমিকা অনেকখানি। গ্রামবাংলার চিরায়ত মেলা দেখে অভ্যস্তরা নগরের মেলায় কতটা আরাম পাবে? একদমইনা। তাই বাণিজ্য মেলা, তাত বস্ত্র মেলার মত নাগরিক ভিড় আমাকে কখনই টানেনা। আমি অভ্যস্থ পায়ে হাটতে পারিনা। দম বন্ধ হয়। এইসব মেলার রঙবাহার দেখলে আমার হাসি পায়। ঐতিহ্যকে দড়ি বেঁধে মেলার মাঠে দাড় করিয়ে রেখে কর্পোরেট বাণিজ্য। তবু যেতে হয়। বাধ্য হয়েই যাই। ইদানিং কঠোরভাবে গৃহপালিত নজমুল আলবাব মেলায় যান। ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। মা, বাচ্চা, বউ, ভাইয়ের বউ, মামু... বিশাল সে বাহিনি। আমার ছেলেটাকি আমার মতই? কিছুটা মনে হয়। সেও আমার মতই খুব দ্রুত দলছুট হয়ে পড়ে। ভিড়বাট্টায় নিঃসঙ্গ হয়ে একা একা গুটি পায়ে হাটে। তাই বিশাল মেলা মাঠে ঢুকতে না ঢুকতেই আমরা ব

কয়েকটা দিন অন্যরকম-৩

অনেক আত্মীয় স্বজন আছেন যাদের সাথে কোন যোগাযোগই নেই আমার। কালেভদ্রে দেখা হয়। হাই হ্যালো পর্যন্ত সম্পর্ক। ঢাকায় গেলে হোটেল নয়ত বন্ধুর বাড়িতেই থাকতে অভ্যস্থ। কিন্তু এবার আম্মা সাথে। তাই অনেকের সাথেই দেখা হল। বারিধারার জনৈক অতি বড়লোক মামার বাড়িতে যেতে হল শুক্রবার রাতে। বড়লোকদের বাড়িকি খুব ঠান্ডা হয়? আমার কেন যেন এইসব বাড়িকে অস্বাভাবিক শীতল মনে হয়। সারারাত প্রচন্ড শীতে আমি কাবু ছিলাম! তবে সকালটা বেশ ভাল লাগলো। সে বাড়িতে থাকা চমৎকার দুটো পিচ্চির সাথে দারুন সময় কাটলো। দুপুর গড়িয়ে যাওয়ার সময়ে শুদ্ধস্বরে র টুটুল ভাইকে (আহমেদুর রশীদ) ফোন করলাম। বল্লেন, তোমার বইতো এসে গেছে অপু। স্টলে দিয়ে দেবো? না করার প্রশ্নই উঠেনা। বল্লাম, অবশ্যই। একটু পরেই আরিফ ভাইয়ের ফোন। কিরে আজও মেলায় যাবিনা নাকি? বলি, হ্যা যাব। তুমি কখন যাবে? বিকালে শুনে, সেইসময় যাওয়াটা ঠিক করি। ফোন রেখে দেয়ার আগে প্রশ্ন করেন, তোর বইয়ের খবর কি? বল্লাম স্টলে চলে গেছে। আরিফ ভাই স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে ঝাড়ি দেয়। তুই এত পাষাণ হলি কবে? বই মেলায় এসে গেছে আর তুই এখনও মামুর বাসায়? জলদি মেলায় আয়। আমি যাচ্ছি... আগেই বলেছি ঢাকায় আমি অন্ধ মানুষ। ড্রাইভাররা

কয়েকটা দিন অন্যরকম-২

শুক্রবার। ফেব্রুয়ারির এক তারিখ। আমার বাবাইসোনার জন্মদিন। বারটা বাজতেই তুলির মোবাইলে মেসেজটোন। মিঠুর মেসেজ। অনন্তমৈথুন নাম দিয়ে সে ব্লগায়। প্রিয় বুলবুলিকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছে। সে বাবাইকে বুলবুলি বলবে। আর বাবাই তাকে বলবে বন্ধু। ফোন হাতে নিয়ে যখন মেসেজ পড়ছি, বাবাই আগ্রহ নিয়ে জিঙ্গেস করে কে ফোন করেছে বাবা? আমি বলি তোমার বন্ধু তোমাকে হেপি বাড্ডে বলেছে সোনা। সে হাততালি দিয়ে নিজেই বলে উঠে, হেপিবাড্ডে তু ইউ, হেপি বাড্ডে ডিয়ার তমাল, হেপি বাড্ডে তু ইউ... সবাই হেসে উঠেন। বাবাই শরম পায়। শুক্রবার সকালটা সবসময়ই অন্যরকম। কেমন এক অলস ভাললাগা ব্যাপার। ঢাকায় এই একটা সময়ই শুধু আমি কিছুটা উপভোগ করি। বাকিটা... বউ বাচ্চা নিয়ে বেরুলাম। গন্তব্য ধানমন্ডি। ফুপু শ্বাশুড়ির বাড়িতে বেড়াতে গেলাম। বাবাই মহা উৎসাহ নিয়ে রাস্তা দেখা শুরু করল। নানা প্রশ্ন আর আলাপে মুখে যেন খই ফুটছে তার। ধানমন্ডির ঠান্ডা ঠান্ডা সেই বাড়িটায় বিকেল হয়ে যায়। আরিফ ভাই ফোন করেন। কিরে মেলায় যাবিনা। কোথায় আছি জেনে বলেন, ঠিক আছে, এ বাড়ি বেড়ানো শেষ করে বলিস, একসাথে যাব। কিন্তু শেষ আর হয়না। ভাবির ফোন। তোমরা আসনা কেন? বরযাত্রি যাবার সময় হয়ে

কয়েকটা দিন অন্যরকম-১

৩০ জানুয়ারি দুপুরের দিকে মাইক্রোবাস কনফার্ম করেছিলাম। ৩১ এর দুপুরে বাসায় যাবে এমন কথা ছিল ড্রাইভারের সাথে। সেই কথা সে বেমালুম চেপে গেল পরদিন দুপুরে। ১ টায় গাড়ি থাকবে বাসার সামনে। আর আমি ফোন করলাম সোয়া ১ টায়। সে তখনও স্ট্যান্ডে দাড়িয়ে। বাড়ি নাকি চিনতে পারছেনা। কি আর করা, দৌড়ালাম। সামনে পেয়ে অন্যকথা বলে। তার ঢাকায় যেতে সমস্যা!!! মাথা ভন ভন করে উঠে। কদাচিৎ গালমন্দের দরকার পড়ে। নয়ত এখন ঝদ্রস্ত জীবনই বলা যায়। ভদ্রতায় ছেদ পড়ল। কষে থাপ্পড় দিতে ইচ্ছে হলেও সে পর্যন্ত আর যাওয়া হলনা। তাজুল মিয়া নামের জনৈক ড্রাইভার উদয় হলেন ঘটনাস্থলে। তাকে পথ দেখিয়ে দেখিয়ে আমি আমার সিডি ৮০ তে টান দিলাম। দুপুর একটায় বেরুব কথা ছিল, সেই যাত্রা শুরু হল আড়াইটায়। দেড়ঘন্টার এই দেরিটার জন্য মাথায় রক্তচাপ বেড়েছে দ্বিগুন। গাড়িতে বসেই আবার ফোন দিলাম মান্যবর ড্রাইভারকে। আরেকপ্রস্ত অমৃত বর্ষন করলাম তার কানে। তিন বছর হল বাবাইর। এই প্রথম সে আমার সাথে কোথাও যাচ্ছে! মনে হতেই কেমন কেমন লাগা শুরু হল। গাড়িতে ধুমাধুম চক্কর দিচ্ছে সে। একবার মায়ের কাছে বসেতো আরেকবার দাদুর কোলে। আরেকবার ডাক্তার দাদার কাছে (আমার মামা)। আমাকেও বঞ্চিত করছেন

শুভ জন্মদিন বাবাইসোনা

সেদিন প্রকৃতি আমাকে রেখেছিল নিরাপদ দুরত্বে। আমি কিছুই টের পাইনি, অন্তত শরিরে। সত্যিইকি তাই? একেবারেইকি টের পাইনি? মনে হয় পেয়েছিলাম। কেমন এক দুরু দুর বুক প্রতিক্ষা ছিল সেদিন সন্ধায়। বাবার সামনে আমি হাটছি, আধো অন্ধকার হাসপাতালের করিডোর। বাবার সামনে আমি! আমিও বাবা হব! কেমন এক অনুভূতি। শীত ছিল তবু ঘামে ভিজে জবুথবু ... আজ তিন বছর হল। এখনও চোখ বুজলে সেদিনটা মনে ভাসে। এখনও যখন আধো আধো বুলিতে তুমি ডাক দাও ‘বাব’ কেমন অবাক লাগে। আমিও তবে বাবা হলাম। আমাকেও কেউ একজন বাবা বলে ডাকে! শুভ জন্মদিন বাবাই সোনা। শুভ জন্মদিন। তুলিকে অশেষ ধন্যবাদ, সব কষ্ট নিজে সয়ে আমাকে এমন চমৎকার উপহার দেয়ার জন্য। তোমার কাছে কৃতজ্ঞ। লেখা হয় সচলায়তনে। ১ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ http://www.sachalayatan.com/albab/12117

শুভ জন্মদিন রনি ভাই

আমার দেখা হল কবে তার সাথে? ১৯৯৪/৯৫ সাল মনে হয়। তবে শীতের দিন, না রাত ছিল সেটা। এবং রোজা ছিল। ঈদের আগের রাত। বন্দরবাজারের আলুপটলময় জঙলায়। দাদাভাই আমারে নিয়া গেছে জুতা কিনা দিতে। ঈদের জুতা। সেই এলাকায় তখন সিলেটের বিখ্যাত করিম উল্লাহ সু স্টোর। আতকা দেখি পান্ডামত এক পোলা সেখানে হাজির। ইয়া লম্বা। কালো একটা লেদার জ্যাকেট গায়ে। সেই জ্যাকেটে আবার দুনিয়ার ট্যাগ, ব্যাজ এইসব লাগানো! দেখেই আমার একটা বদ ধারণা হল। সে দেখি আবার কথা বলে দাদার লগে কথা বলে, ওই টিপু কই আইছস! আমি কই হালার দাদায় দেখি ইদানিঙ পান্ডাগো লগে চলে! জুতা কিনা দিতে গেছে শুনে বলে, এই তুই জলদি মধুবনে যা, সুন্দর জুতা নিয়া আসছে একটা দোকানে। আমি কই আরে বেটায় দেখি আবার খবরও ফেরি করে! তবে কন্ঠটা বেটার গোন্ডাপান্ডা টাইপ না :) বাচ্চা বাচ্চা... আমরা দুই ভাই মধুবনে যাই। দাদারে জিজ্ঞেস করি এইটা কে? সে পাল্টা জিগায়, কেন? আমি বলি পান্ডাদের মত লাগে! দাদা শুধু হাসে... এই পান্ডা লোকটার লগে আমার পরে খাতির হয়ে গেল। মহা খাতির। এমনকি দাদাভাইয়ের চাইতেও বেশি কোন কোন ক্ষেত্রে! আমারে তিনি বড়ভাই ডাকা শুরু করলেন! আমিও তারে বড়ভাই ডাকি। উচ্ছাসের বৈশাখী আয়োজনে