Posts

Showing posts from August, 2014

শুক্কুরবার, বাবা, আমি

শুক্কুরবার রাত থেকেই আসলে মজা শুরু। বাবা সেদিন একটু দেরি করে ফেরে যদিও, কিন্তু মজা হয়। এম্নিতে রোজ বিকালে প্লে-গ্রাউন্ডে যাই। অনেক্ষন থাকি সেখানে। কিন্তু শুক্কুরবারে আগে আগে চলে আসি। যদিও সেদিনই বাবা দেরি করে বাড়ি ফিরে, তবুও। আমাদের বসার ঘরের জানলা দিয়ে তাকালে উঠোন পেরিয়ে একেবারে বাস স্টপ পর্যন্ত দেখা যায়। আমি ঘরে ফিরেই সেই জানলার ধারে বসে পড়ি। অন্যদিন বাড়ি এসে হাত ধোয়া, মুখ ধোয়া, ঘামে ভেজা কাপড় বদলানো কতো কিছু করতে হয়, কিন্তু শুক্কুরবারে সেসব নেই। আগে মা জোরাজুরি করতো, এখন আর করে না। জানে বাবা না আসলে শুক্কুরবারে সেসব কিছুই হবে না। আমি জানলার ধারে বসে বসে দেখি বাবা কখন আসে। বাবার দুহাত ভরে থাকে ব্যাগ, সারা সপ্তার বাজার সেখানে। অফিস শেষে বাজার করে, তারপর বাড়ি ফেরে। বাজারের ভারে বাবা নুয়ে পড়ে যেনো। কাঁধটা ঝুলে থাকে, মাথা নিচু। তবু বাবা একটু পর পর চোখ তুলে তাকাবে আমাদের জানলায়, দেখবে আমাকে দেখা যায় কীনা। এর আগে জানলার ধারে বসা থাকলেও ঠিক তখন আমি লুকিয়ে যাবো। জানালার পাশের দেয়ালে নিজের শরীরটা আড়াল করে শুধু চোখটা পর্দার ফাঁকে দিয়ে দেখছি বাবা হাঁটছে আর আমাকে দেখার চেস্টা করছে। কিযে মজা

এবং বন্ধুতা...

ঝুমুর বয়েসে বড় ছিলো আমাদের, তাই নামের শেষে দাদা যোগ করে সে আমাদের বন্ধু হয়ে গেলো। ঝুমুরদা। মূলত এটা একটা নামই শেষ পর্যন্ত। ওসব দাদাগীরি কি আর চলতো! দীর্ঘ বছর আমরা আড্ডা দিয়েছি। উদ্দাম তারুণ্য বলতে যে সময়টা থাকে, ঠিক সেই সময়ের বন্ধুদের একজন ঝুমুর। এই বয়েসে একটা দলের সাথেতো আর সময় কাটানো যায়না। নানা ধরণের বন্ধু বান্ধব জুটে যায়। তারপর বয়েস বাড়ার সাথে সাথে যেকোন একজন, দুজন অথবা বিশেষ একটা গ্রুপের সাথে যোগাযোগ হয়তো বেশি থাকে, অন্যদের সাথে সেটা কমে। কোন কোন ক্ষেত্রে বন্ধই হয়ে যায়। স্টেডিয়াম পাড়ার সৈকত রেস্তোরাতে বসে আমরা যারা আড্ডাবাজি করতাম, সেটা খেলাধুলাকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছিলো। সেই গ্রুপে কেউ ক্রিকেট খেলতো, কেউ হকি, কেউ ফুটবল। কোন ধরণের খেলাধুলা না করেও আমি আর শামীম সেই গ্রুপে কেমন করে ঢুকে গিয়েছিলাম সেটা আর মনে নাই। কিন্তু টানা ৪/৫ বছর সেই আড্ডাটায় ঘন্টার পর ঘন্টা সময় কাটিয়েছি আমরা। আর সেই আড্ডার মধ্যমনি ছিলো এই ঝুমুরদা। বিচিত্র কাণ্ডকারখানা, মজার মজার কথা দিয়ে আড্ডা মাতিয়ে রাখতো। সৈকত রেস্টুরেন্টের টেবিল কিংবা স্টেডিয়ামের যে কোন একটা গ্যালারী দখল করে প্রতিদিনের আড্ডার আজান দিতো