Posts

Showing posts from 2018

হাসপাতালের দিনগুলো...

রাত এগারোটায় হাসপাতাল থেকে ফোন আসলো, আপনি মি. তুলি? হ্যাঁ বলতেই বল্লো, মাত্র ফোন পেলাম। আপনার স্ত্রীকে পোস্ট অপারেটিভ থেকে নিয়ে আসবে ১৫ মিনিটের মাঝে। আসতে চাইলে আসুন। বল্লাম, আধা ঘন্টা লাগবে কমপক্ষে। উত্তরে হ্যাঁ সূচক জবাব পেলাম। আবার আব্দার করলাম, ছেলেকে নিয়ে আসবো... তাতেও হ্যাঁ। গত ৩/৪ ঘন্টা ধরে এই মহিলাকে ১৫/১৬ বার ফোন করেছি। গলা শুনে অনেক বয়েসী কোন মানুষ মনে হয়। ছেলেকে নিয়ে ছুটলাম। রাস্তা একদম ফাঁকা, তবু জোরে চালানো যাবেনা। মোড়ে মোড়ে ক্যামেরা। লাইসেন্সে এমনিতেই তিন পয়েন্ট জমা হয়ে আছে। আর কিছু হলে ব্যান করে দেবে। বাবাই লম্বায় সেই কবেই আমাকে ছাড়িয়েছে। এখন মনেহয় বুঝতে পারাতেও... বারবার বলে, বাবা চিন্তা করোনা। মা ঠিক আছে। তুমি ঠিক থাকো। ভেতরে ভেতরে আরো গলে যাই, ছেলেটা ভেতরে বিষ চাপা দিতে শিখে যাচ্ছে। যা ভেবেছিলাম তাই। আম্মার বয়েসি নার্স। ওয়ার্ডের দরোজায় দাঁড়িয়ে। "দেখো বাবা, এটা একদম নিয়মের বাইরে। তোমার বার বার ফোনের কারণে আমি সুযোগটা দিচ্ছি। আস্তে আস্তে যাবে। কথা বলবেনা। লম্বা অপারেশন হয়েছে। এটা সবচে বড় অপারেশন গুলোর একটি। মেয়েটা এখন ঘুমুচ্ছে। শুধু চোখের দেখা দেখবে।"

লক্ষ্মী সরস্বতী দীপাবলী

দক্ষিণের জানালায় দাঁড়ালে হিমেল হাওয়ার ঝাপটা লাগে। শীত এলো বলে। আগে এমন সময় শীত প্রায় চলেই আসতো। দূর্গা পূজার সময় থেকেই হালকা কুয়াশা আর শেষরাতে ঠান্ডা ভাবটা শুরু হতো। রাতে পূজো দেখার কিংবা পাড়া ঘুরার সময় সেটা টের পাওয়া যেতো। এখন আর সেরকম হয় না। মাঘ মাসেই শীত আসে কী আসে না। দীপালির একটু একটু গরম লাগে। অস্বস্তি হয়। জানলার পাশে দাঁড়িয়ে শরীরটা জুড়ানোর চেষ্টা করে। সন্ধ্যা আরতী সেরে এলো। বারান্দার এক কোনে ছোট্ট ঠাকুর ঘর। ধূপ জ্বেলে প্রণাম ঠেকিয়েই শেষ করে আরতী। শরীরে এর বেশি সহ্য হয়না ইদানিং। পরিশ্রান্ত লাগে। এ পাশটায় আগে একটা ছোট্ট পুকুর ছিলো। তারপর ধানি জমিন। জমিনের লাগোয়া বড় রাস্তা। পুকুর আড়াল করা গাছের ফাঁক দিয়ে সেসব দেখা যেতো। বিয়ের পর পর, দীপালি সেই ফাঁকফোকর দিয়েই দেখে ফেলতো নিজের বাপ-ভাইকে। বাজার থেকে উত্তর পাড়ায়, তাদের বাড়িতে যাবার এই একটাই রাস্তা। শীতের সময় মাঠ শুকিয়ে খটখটা হয়ে গেলে মহাদেব বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে কোনাকোনি দৌঁড়ে আসতো বোনের কাছে। নাড়ু, মোয়া ধরিয়ে দিয়ে যেতো। দেখতে দেখতে সব বদলে গেলো। এই ধানি জমির বেশিরভাগই ছিলো ওর শ্বশুর বাড়ির জ্ঞাতি গোষ্ঠির। এখন কিচ্ছু নাই। কেউ