Posts

Showing posts from 2010

চাঁদের ছায়া এ-পিঠ ও-পিঠ

অতঃপর নেমে আসে চাঁদ কেওয়াছড়ার মাঠে। সেখানে কুয়াশা জমে বিন্দু বিন্দু, আলোতে চিকিমিকি করে সবুজ চাদর। ছায়াবৃক্ষ পরস্পরে প্রেম বিলায় আর বাতাসে ডানা ঝাপটায় একাকী পেঁচা। আরেকটা নাম না জানা পাখি উড়ে যায় মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শিরিষ ছেড়ে, সুভাষ সচেতন হয়, একটা বাজলো। কাঠালের নিচু ডালে বাঁধা প্রাচীন ঘণ্টায় আলতো ছোঁয়ায় হাতুড়ি, ঢঙ... রাত একটা বাজলো। সুমনা আস্তে আস্তে নিজেরে ছাড়িয়ে নেয়, শ ...অতঃপর নেমে আসে চাঁদ কেওয়াছড়ার মাঠে। সেখানে কুয়াশা জমে বিন্দু বিন্দু, আলোতে চিকিমিকি করে সবুজ চাদর। ছায়াবৃক্ষ পরস্পরে প্রেম বিলায় আর বাতাসে ডানা ঝাপটায় একাকী পেঁচা। আরেকটা নাম না জানা পাখি উড়ে যায় মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শিরিষ ছেড়ে, সুভাষ সচেতন হয়, একটা বাজলো। কাঠালের নিচু ডালে বাঁধা প্রাচীন ঘণ্টায় আলতো ছোঁয়ায় হাতুড়ি, ঢঙ... রাত একটা বাজলো। সুমনা আস্তে আস্তে নিজেরে ছাড়িয়ে নেয়, শফিকুলের হাতটা এতক্ষণ তার পেটে চেপে ছিলো। শ্রান্ত হাত সরানোর সময় হয়নি, কখন ঘুমিয়েছে নিজেই টের পায়নি। সুমনাও ইচ্ছে করেই হাতটা সরায়নি। ঘুমোতে দিয়েছে। এখন যখন সুভাষের ঘণ্টায় বেজেছে একটা,

ঘোষণাপত্র

নিতান্তই এক সরল মানুষ নজমুল আলবাব মূলত সে দুঃখবোধ নিয়েই বেঁচে থাকে এই পত্র মারফত সে জানান দিতেছে যে সে মরেনাই, সে বেঁচে আছে... যারা যারা ভুলে বসে আছো বিষন্ন আলবাবকে যারা ভেবেছো কান্নার সময় ফুরলো বলে তাদের জন্য এই পত্র, হতাশ হতে হলো তোমাদের, কেননা, আলবাবরা সহজে মরে না

হবে না

আমার কিচ্ছু হয় না, আমার কিচ্ছু হবে না, এই কথা জেনেছি আমি আর আমার মা ব্যর্থ মানুষেরও থাকে হিসেবের  খাতা আজন্ম বেহিসেবি আলবাবের তাও নেই

এইসব উজ্জ্বল ভালোবাসা

আমি কথা বলা বন্ধ করে দিলেই তুমি বলতে, রাগ করেছি। তুমি কথা বলা বন্ধ করলেই আমি বলতাম, রাগ করেছো। তাই আমাদের কথা বলাবলি কখনো বন্ধ হতো না। অথবা রাগ হলে আমরা কথা বলা বন্ধ করেই তার জানান দিতাম। আমরা কথা বলি না, সে অনেক দিন হয়ে গেলো। তুমি কেমন আছো তার খবর আমার কাছে নেই।, আমি কেমন আছি তার খবরও তোমার জানার দরকার পড়ে না। এইসবব অভিমানে মিশে থাকা মৃত্যুর যন্ত্রনা থেকে আমাদের বুঝিবা আর মুক্তি নেই। কেননা আমরা জেনেছি, নিজেরে পুড়িয়ে জেনেছি সেই সত্য, ভালোবাসা মানেই কাছে থাকা নয়, প্রেম মানেই নিঃশ্বাসের দুরত্বে বসে থাকা নয়। বিরহে উজ্জ্বল হয় ভালোবাসা, এই বার্তাটারে আর কে এমন ধারণ করেছে বলো?

লীলাবতীর কাছে খোলা চিঠি

এ অসুখ সারবে না লীলাবতী, বড়ো বেশি জীবনক্ষয় করে এ অসুখ সারে না বলে শুনেছি, হ্যাঁ, লোকে তাই বলে গতরাতে তোমার গান শুনতে শুনতে ঘুমাতে গেলাম তার আগের রাতেও বেজেছে এই গান, আজও বাজবে তোমাদের বাড়িতে নাকি রোজ সন্ধায় জোনাকীর মেলা বসে? আজ আকাশ কি তারায় ভরা? চাঁদের বয়েস কতো? তুমি কি আজ চাঁদ ছোঁবে, মাঝরাতে কি আকাশে তাকাবে? আমার হয়ে আকাশকে একটু ভালোবেসো তুমি লীলাবতী আরো অনেক দায় আমি তোমাকে দেবো, এই অসুখে দায় চাপাতে শেখায়, আমি নাহয় তোমার কাছেই হই দেনাদার এ অসুখ সারবে না লীলাবতী, এ অসুখ সারে না বলে শুনেছি।

ভ্রমণ (আনন্দময়) হয়েছে (শেষ)

Image
১০. সন্ধ্যার অন্ধকার গাঢ় হয় হয় এমন একটা সময়ে পৌঁছে গেলাম হিরণ পয়েন্টে। বিখ্যাত স্পট। বনবিভাগের বিশাল অফিস সেখানে। আছে নৌ-বাহিনী আর মংলা বন্দরের দুটো আস্তানা। আগেরবার প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে শেখ হাসিনা সুন্দরবন নিয়ে কি একটা প্রজেক্ট আর রামসার এরিয়া ঘোষণার জন্যে সেখানে গিয়েছিলেন। বিশাল একটা ফলক লটকে আছে সেখানে। আছে এই এলাকার একমাত্র মিঠাপনির পুকুর। জেটিতে বোট বেঁধে আমাদেরকে ভেতরে নিয়ে যাওয়া হলো। যথেষ্ঠ মানুষের আনাগোনা সেখানে। তবু হরিণ দেখতে পেলাম। ঘুরছে রাতের আলোতে। শুনলাম বাঘও আছে আশেপাশে। বনকর্তা জানালেন একাধিক বাঘ নাকি সেখানে আছে। প্রচুর খাবার পাওয়া যায় বলেই হয়তো এটা ঘটেছে। কারণ এর আগে শুনেছি একটা নির্দিষ্ট এলাকায় কয়েকটা বাঘ সাধারণত থাকে না। খাবার পানির পুকুর পাড়ে বসে আছি। শান বাঁধানো ঘাট। বনবিভাগের এক অফিসার গল্প করছেন। নানান কিসিমের গল্প। এইবার আর মুস্তাফিজ ভাইকে বলতে হলো না। আমি নিজেই বুঝে গেলাম, চাপা... সবটা না হলেও অনেকটাই চাপা। (জেনারেল স্যার, আমি কি কিছু শিখলাম? ) টানা চারদিন কি দুদিনও আমি মাছ খেয়েছি কোন জনমে, এটা কেউ বল্লে, আমার মা বলবেন, আপনে ভুল করতেছেন। সে আমার ছেলে না, অন্

পুনর্বার কয়েক টুকরো দিন যাপনের গল্প...

Image
পানি বাড়ছে রোজ। সকালে একবার করে নদীর পারে যাই। পানি দেখি, হু হু করে বাড়ছে। রোজ বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি ছাড়া কোন ২৪ ঘন্টা পাচ্ছি না। কোন কারণে দিনে রোদ দিতে হবেই এমনটা হলে, সকালটা ভিজিয়ে যাচ্ছে! আর সারাদিনের রোদ এর শোধ তুলে রাতে। আমার সবচে প্রিয় বাহন মোটর সাইকেল। ১৬ বছর ধরে টানা চালাচ্ছি। তবু শখ মেটে না। বৃষ্টির কারণে এটা চালাতে পারছি না। দারা-পুত্র নিয়ে চলতে হয়, আমার ভেজার শখ তাদের উপর দিয়ে চালালেতো হবে না। তাই বাক্সোবন্দি হয়ে চলাফেরা করি। প্রায় তিনটা মাস ধরে মহা বিশ্রি এবং বাজেভাবে সময় কাটাচ্ছি। আব্বা আম্মা দুজনেই দেশের বাইরে, বাড়িটা পাহারা দিয়ে রাখতে হচ্ছে। সন্ধ্যা হলো, হাস মুরগি ঘরে তোলো, এই বাক্যের সাথে নিজেরে মিলিয়ে দিতে হয়েছে এতদিন। তার উপর রোজ বাবাইকে তার নানার বাসায় রেখে আসতে হয়েছে সকালে, আবার বিকালে নিয়ে আসো। এজন্যই মূলত নদীর সাথে নতুন করে প্রেম প্রেম একটা ভাব হয়েছে। আমি নদীবর্তী মানুষ। হাওর-নদীর জলজ পরিবেশ ও প্রকৃতিকে সঙ্গী করে বড়ো হয়েছি। নাগরিক হয়ে উঠিনি তবু নগরেই থাকি, তাই এখন জলের গভীরে আর যেতে পারি না। বৃহস্পতিবারে সুরমা পাড়ি দিতে হলো। ক্বীন ব্

অক্ষমের চিঠি

আমার ভেতরে বড়ো বেশি উচাটন। অকারণে পেছনের কথা ও সময়কে আঁকড়ে ধরে পড়ে থাকি। যেদিন সবুজ বাতিটা জ্বলা বন্ধ হলো, যেদিন জানলাম আপনি অসুস্থ, সেদিন থেকে রোজ একটু পর পর দেখতে থাকি বাতিটা জ্বলে কী না। না, জ্বলেনি। আর জ্বলবে না। তবু আমি রোজ রোজ একবার করে কন্টাক্ট এর লিংক ধরে সেই নামটা দেখি... না, জ্বলে না। গতমাসে একদিন সকালে উঠে সোজা বসলাম পিসিতে। জিমেইলে ঢুকে প্রথমেই দেখি সেই বাতিটা ধুসর হয়েই আছে। দেখি মাসুদ ভাই এর নামটা সবুজ হয়ে আছে। আমি তারে বলি, ভাই একটা কথা শুনবেন, একটা জিনিস দরকার, দেবেন? তিনি বলেন, কি? আমি বলি, জুবায়ের ভাই এর একটা ছবি দেন... জুবায়ের ভাই এভাবেই আমাকে আচ্ছন্ন করে রাখেন, সবসময়। এই দীর্ঘ সময়ে একটা দিনের জন্যেও তাঁকে ভুলতে পারলাম না। আমার নোটবুকে একটা ঠিকানা লেখা। কথা ছিলো এই ঠিকানায় একটা ক্ষুদ্র পুস্তক যাবে। আমাকে নিয়ে এমন আগ্রহ কে কবে দেখালো আর? আমার এক পরিচিতজন বলেন, ইনি কে ছিলেন? সচলের সবাই তাঁর প্রতি এতো অনুরক্ত কেনো? আমি বলি, ইনি কি ছিলেন না সেটা জিজ্ঞেস করেন। তিনি আবার প্রশ্ন করেন, তাঁর মেয়ের চিঠিটা পড়েও আপনারা কিছু বুঝতে পারলেন না? সেই চিঠির পরতে পরতেইত

মাথেল মাথা থেকে নেজ বলো কলে ফেলেছি... এ্যা... এ্যা...

আমাকে তিনি গল্প বলেন। ছবি দেখান। সম্ভবত সেটা এক বছর বয়েসের ছবি। সাদাকালো ছবি। একই বয়েসের দুজনের দুটি ছবি। কিন্তু পোষাক একি। একজনের সাত বছর পর আরেকজনের ছবি তোলা হয়েছে। প্রথম ছবিটা তুলে যত্ন করে তুলে রাখা হয়েছিলো পোষাকটা। ছবির নিচে লেখা আছে এপ্রিলের ৯ তারিখ... এটা ভুলও হতে পারে আমার। আরেকটা ছবি রঙিন। বিখ্যাত আলোকচিত্রি আমানুল হক এর তোলা। প্রাণখোলা হাসিমাখা সেই ছবিটা। ছবির বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, এসব কাপড় ছবিয়ালের নিজের। ছবি তোলা শেষ হলে আবার খুলে নিয়ে যেতেন! সাথে একটা মজার ঘটনা বল্লেন, একবার উপর থেকে গাছের নিচে দাঁড়ানো বাচ্চার ছবি তোলার প্ল্যান করে তিনি এলেন। এসে সেই মডেলকে পাঠালেন নিচে আর তিনি উপর তলার জানালা দিয়ে ক্যামেরা ধরে বসে থাকলেন। হঠাৎ সেই মডেল কানে হাত দিয়ে আজান দেয়া শুরু করে। ডানপিটে মডেলের কারণে ছবিটাই আর তোলা হলো না। আমরা আসলে গল্প করছি এই মডেলকে নিয়ে। ছবিয়াল আসলেন তার কথা বলতে গিয়েই। আর গল্প করছেন মডেলের জননী নিজেই। পুরো একটা দিন যিনি আমাকে পরম মমতায় কাছে বসিয়ে নানান বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। আর ফাঁকে ফাঁকে বলেছেন মডেলের গল্প। স্কুলে ভর্তি হওয়

পতঙ্গের জীবন

সূর্যটা কমলা রং এর হতে না হতেই তুমি প্রস্তুত। একবার বাবাকে, একবার মা'কে আরেকবার দাদাকে তারপর দাদু। সবার কাছে একটাই প্রশ্ন, দেরি হলো? তোমার কোমল শরীরটা দাঁড়াতে চায় না। তোমার পিচুটি জড়ানো চোখে জলের ঝাপটা দিতে দিতে, ফোকলা দাঁতে ব্রাশ ঘষতে ঘষতে, তুমি জিজ্ঞেস করো, আজও কি লেইট? তুমি চলতি পথে বার বার প্রশ্ন করো, আজও কি শুনতে হবে লেইট মর্নিং? নাকি আজ গুড মর্নিং এখনও রয়েছে? লাল দালানে ঢোকার আগে আমি তোমাকে দেখি না। দেখি না তোমার দুরুদুরু বুক করুণ চোখ, তুমি ত্রস্ত পায়ে ভেতরে যাও, ফিরে তাকাও, হাত নাড়ো। বাবাই, তোমার স্কুলের গেটে দাড়িয়ে থাকা দারোয়ানকে আমার বড়ো বেশি ভাগ্যবান মনে হয়। প্রতি ঘন্টায় তুমি যখন একবার করে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আকাশ দেখো, তখন সে তোমাকে দেখতে পায়। আমি দেখি না...

সরীসৃপ

রোদ ম্রিয়মান হলে এ শহর নিজেরে ঢেকে দেয় কুয়াশার কাফনে ফুটপাত ধরে হেঁটে যাই, কনকনে বাতাস, মিহি থেকে তীব্র হয় আমাদের চেনা এ পথে এখন সকলই অচেনা মুখ, অচেনা সুর সড়ক দ্বীপে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাফিক পুলিশই শুধু চেনা জানা কেননা সেই পুরনো পোষাকেই দাড়িয়ে থাকে সে, তোমার আমার মতো বারবার পাল্টায়না খোলস। নীল পোষাক, সাদা পোষাক, খয়েরি পোষাক তোমার... স্লাইড শোর মতো একটার পর একটা ছবি দ্রুত মিলিয়ে যায় আমি পাল্টাই, তুমি পাল্টাও, ঘেন্না হয় এই সাপের জীবন।