Posts

Showing posts from 2007

আজ পিকনিক হল, ধন্যবাদ হে মহামান্য...

মাননীয় রাস্ট্রপতি আজ আপনি এসেছেন আমার পাশের ঘরে। পাশের ঘর মানে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে আজ সমাবর্তন। সনদ বিতরনের অনুষ্ঠানে আপনি দেশ উদ্ধারের নানা কথা বল্লেন নিশ্চয়। সাথে এও নিশ্চয় বলেছেন রাজনীতি করাটা খুব খারাপ। বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি করলে জেলে যেতে হবে। যদিও আপনি এই ধারার এক মহান পুরুষ ছিলেন বলে শুনেছি। সে যাই হোক, আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের এক গরিব এবং পশ্চাদপদ গ্রামের বাসিন্দা। আপনি আসবেন বলে আজ সকাল থেকেই আমাদের একমাত্র রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সকালে নিম্ন আয়ের মানুষগুলো যখন শহরে যাবে বলে বেরিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের লাগোয়া সড়কে যেতেই তাদেরকে আটকে দেয়া হয়েছে। সঙ্গিন উচিয়ে আপনার নিরাপত্তায় নিয়োজিত রীরা বলেছে রাস্তা বন্ধ! আমি ছাপোসা প্রেস ব্যবসায়ী। মানুষের এটা সেটা ছাপিয়ে জীবন ধারন করি। আমি জানতামনা আপনি আসবেন বলে রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়া হবে।। আমাকে কেউ বলেনি এ কথা। এটা হয়ত আমারই দোষ। এটা জেনে নেয়া উচিৎ ছিল আমার। আমি শহরে যেতে পারিনি। আমার ৯বাই৯ ফিটের অফিসটা আজ খোলা হলনা। এক স্কুলওয়ালা তার প্রসপেক্টাস ছাপাবেন বলে আজ আসবেন বলেছিলেন। আমি যেতে পার

কষ্ট জমাট বুকের ভেতর

২০০৪ সালের এপ্রিলে শেষ দিন। ইখতিয়ার ভাই ফোন দিলেন। তিনি সিলেটে এসেছেন। দেখা করার জন্য বল্লেন। এক ঘন্টার নোটিশ। দ্রুত গেলাম। রাজা ম্যানশনে ভোরের কাগজের অফিস। সেখানে গিয়ে দেখি সঞ্জিবদা। সাথে অন্য আরেকজন। ইখতিয়ার ভাই পরিচয় করিয়ে দিলেন, আমিনুল এহসান, ডেমোক্রেসিওয়াচের মানুষ। দাদা’র সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে চাইলে বল্লেন, তারেত আমি চিনি, আমরার আরিফ’র ভাই নায়নি? তুমি আইলায় কোনদিনবা? আগের সপ্তাহেই মাসিক একটা পত্রিকার কাজের জন্য ঢাকা গিয়েছিলাম। শ্যামলদা’র সাইবার ক্যাফেতে দেখা হয়েছে। সাথে আরিফ ভাই ছিল। দাদা মিলিয়ে নিয়েছিলেন। এর আগেও অনেকবার দেখা হয়েছে। ঢাকায়, সিলেটে। প্রথম পরিচয় প্রিয় প্রান্তিকে। স্বপনের চায়ের দোকানে। শেষ দেখাটা কবে হল এখন আর মনে পড়ছেনা। তবে বছর দেড়েক হবে এটা নিশ্চিত। তখন আমাদের সময়-এ কাজ করি। বলেছিলেন, ইন থাকি কিতা ওইব? নাইম ভাইয়ে টেকা দিতনায় জীবনে। এমনি আন্তরিক ছিলেন সঞ্জিবদা। অল্প পরিচিত এক তরুনকে নিয়েও তিনি ভাবতেন। গতবার সিলেটে একটা অনুষ্ঠানে হানিফ সংকেতকে আনার চেস্টা করেছিল আমার ভাই। সঞ্জিবদা শত ব্যাস্ততার মাঝেও সময় দিয়েছিলেন তাকে। হানিফ সংকেতের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছিলেন। এস

লোকটা চাঁদকে বড় বেশি ভালবাসত...

সেটা আমার প্রথম সুনামগঞ্জ যাত্রা। বন্ধুরা মিলে গেলাম। বড়দের মাঝে ছিলেন নূর ভাই আর টুকু’দা। শহর সুনামগঞ্জে আমাদের দুঃসম্পর্কের কয়েকজন বন্ধু ছিল। যাদের কেউ কেউ এখন কাছের বন্ধু হয়ে গেছে। সেদিন আমরা বসেছিলাম সুনামগঞ্জের পৌরসভা কার্যালয়ে। নির্দিষ্ট করে বল্লে পৌর চেয়ারম্যানের কক্ষে অবাক করার মত ঘটনা হতে পারত এটা। কারণ আমার বন্ধুরা কেউ রাজনৈতিক পান্ডা ছিলনা। ওরা ছিল কবিতার কামড়ে অস্থির তরুন-তরুনি। আর সেই শহরের চেয়ারম্যান ছিলেন মমিনুল মউজদীন। কবি পুরুষ। যিনি চাঁদের রাতে নিভিয়ে দিতেন শহর সড়কের সব বাতি। তাই চেয়ারম্যানের রুমে বসে সেদিন আড্ডা দেয়াটা স্বাভাবিক ছিল।কতবার নির্বাচিত হয়েছিলেন মউজদীন ভাই? তিনবার মনে হয়। হাছন রাজার প্রপৌত্র চাঁদকে যেমন ভালবাসতেন তেমনি ভালবাসতেন কবিতাকে আর অতিঅবশ্যই মানুষকে। আচ্ছা আমি এভাবে বাসতেন লিখছি কেন? হ্যা লিখছি, লিখতে হচ্ছে। কারণ মানুষটা আজ চলে গেছেন! চলে যেতে হয়েছে তাকে। স্বপরিবারে। জিবরান, মউজদীন ভাইয়ের ছেলে। কবির নামে নাম রেখেছিলেন, সেই জিবরানও চলে গেছে আর গেছেন মউজদীনের স্ত্রী। ঢাকা থেকে ফিরছিলেন। ব্্রাম্মন বাড়িয়ার কাছে সরাইলে ঘটেছে ঘটনাটা। বিপরিত থেকে আসা যাত

:: আলবাব'র সময় ::

সন্ধার অন্ধকার মিলিয়ে যেতেই নেমে আসে মিহি কুয়াশা। রমনীর স্তনের মত জেগে উঠা জোড়া পাহাড়ের ফাঁকে মুখ তুলে রুপালি থালা, চাঁদ বলি তারে। কালো পিচের ওপর দিয়ে দ্রুত হেটে যায় সন্ত্রস্ত শিয়াল, কু ডেকে উঠে অচেনা পাখি কাটা পাহাড়ে চাঁদ আলো ফেলে, লক লক করে উঠে নাগরিক শকুনের লোলুপ জিহ্বা... রাত নেমে আসে আধা গ্রাম আধা শহর বড়গুলে, বাউল বাতাসহীন এইসব সন্ধায় আলবাব আর আগের মত আপ্লুত হয়না। নাটকের ঘর গুলোতো আগের মত আর মহড়া জমেনা। এখন পাথরের হিসাব করে সবাই, এখন সিমেন্ট আর ইটের ভালবাসা জমে উঠে, গাথুনি শক্ত হয়। আমরা শুধু আলগা হয়ে যাই, ছড়িয়ে পড়ি। দুরাগত তারাদের মত আমরা শুধু শুন্যতাকেই ধারন করি।

:: বৃষ্টি মানেই প্রেমভাব নয় ::

প্রতিটি ভোর কুয়াশা মাখা কোমল হবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। বৃষ্টি হলেই প্রেমভাব জাগ্রত হতে হবে এমন কোন সহি হাদিসও নেই কোথাও, কিংবা কোন পাক কালামেও পাওয়া যায়নি এ সংক্রান্ত কোন নির্দেশনা... এখন সময় হয়েছে গৃহী হবার, এখন তুমি পিতা। যতটা সময় পেছনে ফেলে এলে তার যত দেনা আছে এবার তার শোধবোধের পালা!

কতিপয় ইতিহাস আর বেকার হয়ে যাওয়া আমি

এই লেখাটা ঠিক বিন্যস্ত নয়। অগোছালো ভাবনা এবং মনের কথা... এই মুহুর্তে আমি বেকার। হ্যা বেকার। কাজকাম নাই। ব্যবসাপাতি নাই। এই কিসিমের মানুষতো বেকার বলেই পরিচিত। খুব কম বয়েসে আমি পেশাদার হয়েছি। আমার বন্ধুরা যখন নোট আর লেখাপড়ার কাজে ব্যাস্ত তখন আমি সিলেট শহরের প্রথম সারির বাজার জরিপকারী! আমার রোজ তখন ১৬০ টাকা! ১৯৯৪/৯৫ সালে এটা বিরাট অংকই ছিল। পেট্রলের লিটার তখন ১৪ টাকা মনে হয়। আমি চালাতাম হোন্ডা-৫০। তিন লিটারের টেঙ্কটা ভরলে শেষ হতে চাইতনা! লেখালেখির একটা বাতিক ছিল তখন থেকেই। ৯৭/৯৮ এর দিকেই ঠিক করে ফেলেছি লাইনটা কোনদিকে যাবে। ২০০১ সালে হুট করেই সিলেটের একটা দৈনিক পত্রিকায় ঢুকে গেলাম। এবং মজে গেলাম। আজিব আজিব সব কান্ড কারখানার সাথে শুরু হল জীবন। কাজ করে অতৃপ্তি ভর করে। মুজাহিদ শরিফ বলে একজন ছিলেন। যিনি হাত ধরে ধরে শিখালেন পত্রিকার নানা গলি-উপ-গলি। তারসাথে বসেই আলাপ আর পরিকল্পনা। একটা নামের জন্ম হয় সিলেট প্রতিদিন। নানা ভজঘট শেষে ২০০৪ এ বিয়ে। ২০০৫ এ সন্তানের জনক। এরিমাঝে টেলিভিশন, জাতীয় দৈনিকের সাধ নেয়া হয়ে যায়। মাথার চিন্তাটা আরও বিস্তার পেয়েছে। ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নূর ভাই ( আহমেদ নূর ) বল

সংসারি মানুষরা সব স্বার্থপর হয়। খুব খুব স্বার্থপর...

মঙ্গলবার সন্ধায় যখন ভাবি বলেন, তুলি চল ঢাকা থেকে ঘুরে আসি। আমি সামনে বসা। ভাবছি, আর মানুষ পায়নি... শেষ করতে পারিনি সেই ভাবনা, আমাকে অবাক করে রাজি হয়ে যায়! সে যাবে... এমনকি আমি যাব এই ঘোষনাটাও দিয়ে দেয়! প্রচণ্ড ঘরকুনো তুলির এই আচরনে বেশ মজাই পাই। জিজ্ঞেস করি, কিভাবে? ছুটি নিলেনা... আমারওতো ছুটি নিতে হবে। বেশ একটা ঝামটা খেলাম। তারটা সে সামলাবে। আমার যেহেতু ছুটি নাই তাই অফিসে এমন ব্যবস্থা করি যাতে ফোন দিয়ে কাজ সারা যায়! সন্ধায় অফিসে চলে আসি। তাদের পরিকল্পনা আর আমার জানা হয়না। মধ্যরাতের আগে আগে ঘরে ফিরে দেখি ব্যাগ গোছানো শেষ। আমাকে জানানো হল, আমার কাপড়ও ঢোকানো হয়েছে সেই ব্যাগে! কি পাগলামি বলে উড়িয়ে দিতে চাই। মান অভিমানের গন্ধ পেয়ে কথা বাড়াইনা। আর খুব ভেতরে, মনের ভেতরে একটা লোভও হয়। কতদিন ছুটি কাটাইনা। এতদিনেও ছেলেটাকে নিয়ে কোথাও বেড়ানো হলনা। বুধবার ভোরে ছেলে আমাকে ডাক দেয়, বাবা উঠ... আমরা ঢাকাত যাই... সেজ ভাইয়ায় গাড়ি আনছে... ছেলেকে জড়িয়ে ধরে বলি, তুমি যাও বাবা। বিকালে আসব আমি। সে বায়না ধরে, না এখন... আমি তাকে মানাতে পারিনা। আম্মা আসেন। বলেন, দাদু চল আমরা যাই। বাবা বিকালে আসবে। ছেলে আমার কি

:: এক হাতে আর তালি বাজাবনা ::

আর ভাল্লাগেনা, পেছনের বেঞ্চে বসে বসে আমি ক্লান্ত। মনোযোগহীন হয়ে থাকতে আর ভালো লাগেনা, একদম ভাল্লাগেনা, একদম... মিছিলের পেছনে আর কত হাটব? এবার আমি সামনে আসতে চাই। আর কত অন্যের তোলা সুরে গলা মেলাব? এক হাতে তালি বাজাতে বাজাতে হাত তার স্বতস্ফুর্ততা হারিয়েছে। সে এখন সঙ্গি খোঁজে। এবার আমি শীতঘুমে যাব দেখি কেউ আমার ঘুম ভাঙ্গাতে আসে কিনা

:: কাল ঘুম নেমে আসে তার দু'চোখ জুড়ে ::

১. কাল রাতেও ঘটনাটা ঘটল। আমি খেতে বসতেই অনন্যা এসে হাজির। হিস হিস করে বলে, ‘ ভাবী তোমার লজ্জা করেনা? নিজের বুঝ ঠিকই বুঝ, আর অন্যের কিছু পেলে হুলস্তুল বাঁধিয়ে দাও!’ আমি আর খেতে পারলামনা। গলায় কষ্ট দলা পাকিয়ে ব্যাথা শুরু হল। চব্বিশ ঘন্টা আগের ঘটনাটা বলতে গিয়েও রুপার গলাটা ধরে আসে। কেঁদে ফেলে। জহির বউকে শান্তনা দেয়। আহা কেঁদনাতো। ঠিক হয়ে যাবে সব। কালই আমি বকে দেব অনন্যাকে। রুপার মন অন্যদিকে ফেরাতে চেস্টা করেন। তবু সে ফুঁপাতে থাকে। বলে যায়, মা-ও কিছু বল্লেন না। যেন আমি মহা অন্যায় করেছি। তারইতো মেয়ে। কিছু যদি হয়, আমার থেকেতো তারই বেশি কষ্ট হবে। কিন্তু তার ভাব দেখে মনে হল অনন্যা যা করছে ঠিক করছে। আমি এ নিয়ে কথা বলে অন্যায় করেছি! আর এমন কি আছে যেটা আমি আগলে রাখি। কি এমন অপরাধ আছে আমার... রুপার হয়ত আরও কিছু বলার ছিল। পিয়ারি সেটা হতে দিলনা। রাত একটায় তার একবার খাবারের দরকার হয়। বুকের দুধ পায়না বলে সময় ভাগ করে ফিডার দিতে হয়। রুপা ব্যস্ত হয়ে পড়ে পিয়ারিকে নিয়ে। জহির হাপ ছেড়ে বাঁচে। মেয়েকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলে রুপা অন্যভূবনে চলে যায়। জহির মুগ্ধ চোখে রুপার সন্তান সেবা দেখতে থাকে। তার চোখ বুজে আস

:: নাতাশার নানীর গাড়ীতে ::

আহা আলবাব তুমি আর কত বেচাইন হবে! নাতাশার নানীর গাড়ীতে বসে বসে তুমি এইসব উকিল মুহরির দৌড় দেখেই আগামী দিন কাটানোর জন্য প্রস্তুতি নাও... আহমেদ নূর বেটা চাঁদাবাজ বটে! তার আছে আরও অনেক জারিজুরি তুমি তার কত পাশ টানবে? তোমার আর কতটুকুনই আছে ক্ষেমতা? নাতাশার নানী এই গাড়ী কিনেছিল বলে, তার গাড়ির রেজিস্ট্রেশন দরকার বলেই আজ এই কাচারির উঠানে তুমি আরামে বসে আছ আর গেজাতে গেজাতে গিলছ আমের আচার, গোপালের পান। বিকেলের নীল প্রিজনভ্যানে দাগী অপরাধীর ভিড়ে ভাঙ্গা পা টানতে টানতে মৌলির বাবা যখন মিশে যান, তার আগে পত্রিকায় মোড়ানো মিহিদানা মিস্টি হাতে পেয়ে লোকটার চোখ কেমন জ্বলজ্বল করে উঠে... আহা আলবাব তুমি আর কত বেচাইন হবে... এইসব উকিল মুহরির দৌড় দেখেই আগামী দিন কাটানোর জন্য প্রস্তুতি নাও...

:: বৃষ্টির গান ::

এপাশে বৃষ্টি ওপাশে বৃষ্টি জারুল বৃক্ষের শিয়রে সংসার তুমি যোগীনী... ধ্যানে মগ্ন... আদম কী ইভ'কে এভাবে কখনো জড়িয়ে ধরেছিল বৃষ্টির শিয়রে... আলবাব... যোগীনীর নিঃশ্বাস... ইভের ঠোঁট এতটা কোমল ছিলনা নিশ্চিত।

:: সে রাতে পূর্ণিমার সাথে আমি তোমাকেও দেখেছি ::

১. তখনও বুঝিনি আকাশে অতটা উজ্জলতা ছিল। হঠাত করেই ইলেকট্রিসিটি চলে গেল। মুমু বল্ল সে ছাদে যাবে। বন্ধ ঘরে তার ভাল লাগছেনা। দম বন্ধ হয়ে আসছে। বাধ্য হয়ে তাই বেরিয়ে আসি। মোমের আলোয় যতটা দেখা যায় ততটা দেখে সিড়ি বাইতে থাকি। একহাতে মোম অন্য হাতে ধরে রাখি মুমুকে। সিড়িটা বেশ খাড়া। অন্যবাড়ির দেড় সিড়ি সমান এর একেকটা সিড়ি! মুমুকে বলি, কষ্ট হচ্ছে উঠতে। ম্লান হাসি হেসে বলে, তুমি জিজ্ঞেস করতেই উধাও হয়ে গেল! আমি দাঁড়িয়ে যাই। ওর চোখে চোখ রাখার চেস্টা করি। মোমের আলোয় কেমন এক মায়ার খেলা দেখতে পাই। বিষন্নতার মাঝে খেলা করে যেন অন্যরকম এক আলোর ছটা। সিড়ি ঘরের দরজাটা খুলতেই আমি চমকে উঠি। বিস্ময়ে উল্লাস করে উঠে মুমু। কতদিন পর মুমু এমন বিস্মিত হয়! আশ্চর্য রুপালী আলোর কেমন এক ঘোর লাগা সময়ে আমরা প্রবেশ করি। মুমু মাদক জড়ানো কন্ঠে বলে, আজ কী পূর্ণিমা! আমি বলতে পারিনা। কতদিন হল পূর্ণিমার খোজ নিতে পারিনা। ছাদে ছড়িয়ে আছে ছোটবড় বেশকটা ফুলের টব। বাগান বাগান একটা ভাব আনার চেস্টা করা হয়েছে। তিনতলার মিতা ভাবীর কাজ। সিমেন্ট দিয়ে দুটি বেঞ্চও বানানো হয়েছে। তারই একটাতে বসি। আসলে আমি বসি। মুমু দাড়িয়ে থাকে বেশ কিছুন।

:: আমাদের ক, খ, গ, ঘ, এবং ঙ ::

ক. বাড়ির সামনেই কবরটা। সাদা মার্বেল দিয়ে বাঁধিয়ে রাখা। আগে ছিল লাল রংএর ইটের দেয়াল। তিন বছর আগে দাদা যখন সার্টিফিকেটধারী রাজমিস্ত্রি হল তখন মার্বেল দিয়ে বাঁধিয়ে দিল। এতে নাকি তার মেধার উন্নতি হবে। আগামিতে সে হবে ফাঁটাফাঁটি ইঞ্জিনিয়র। এমনই আমাদের বিশ্বাস। আমরা সবাই বিশ্বাস করি। যতকিছু আছে আমাদের ভালো সবই তার দোয়ায়। আমরা বিশ্বাস করি আমাদের বিপদ আপদ সবই হয় যখন তিনি রেগে যান। খ. আমাদের মূলত নির্ভেজাল জিবনযাপন। আমদের বাড়ির ছেলে মেয়েরা পড়ালেখায় ভাল। পাশ করার আগেই তারা কাজ পেয়ে যায়। ভালো ভালো সব চাকরি। ভালো সব ব্যবসা। সবই আছে আমাদের। গ. রোজ স্কুল, কলেজ অথবা অফিস যাওয়ার পথে আমরা শান বাঁধানো কবরটার সামনে দাড়াই। নতজানু হই। আমরা নিজেদের জন্য সুভসময় নিশ্চিত করে সেই কবরের সামনে থেকে যার যার গন্তব্যে রওয়ানা দেই। বাবা বলেছেন, মা-ও বলেছেন কবরের সামনে নতজানু হই বলেই আমরা নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারি। ঘ. শাহানা একবার স্কুলে মাথা ফাটিয়ে ফেলেছিল। কিভাবে তা জানিনা। তবে মা বলেছিলেন, সেদিন নাকি ওর কবরের কাছে যাওয়া নিষেধ ছিল। তবুও গিয়েছে তাই এই শাস্তি। এভাবে প্রতি মাসে নিয়মিত শাহানার উপর কবরে যাওয়ার

:: আমার কোনদিন দুধ চা খাওয়া হবেনা ::

বেশি সময় কারও লাগেনা। বুঝে ফেলে। আমার দৌড়টা তাদের জানা হয়ে যায়। এর জন্য আমি নিজেই আসলে দায়ী। ভাব ধরাটা শিখতে পারলামনা। তাই খুব সহজেই সবাই বুঝে ফেলে আমি মূলত অন্তজ শ্রেনীর মানুষ। আমি নাকি ঠিক মানানসই নই এই সময়ের জন্য। পরিচিতরা সবাই বলে। এমনকি মাও বলেন, তুই বুঝিসনা দিনদুনিয়া কোন তালে চলে এখন! আমি কোন উত্তর দিতে পারিনা। মাথা চুলকাই। কাদির মিয়া আমাকে কেন যেন খুব পছন্দ করে। জেলখাটা দাগী আসামী। নামের শেষের মিয়াটা উধাও হয়ে সেখানে ডাকাত শব্দটা ঠেসে ছিল অনেকদিন। কি করে যেন সে আমাদের অফিসে এসে জুটে গেল আর আজব কোন এক কারনে আমার সাথে তার খাতির হয়ে গেল। কাচের মগে লাল চা দিতে দিতে বলত, স্যার আপনার জীবনে কোনদিন দুধ চা খাওয়া হবেনা। আমি অবাক হয়ে বলতাম, মানে? সে বলত, এইত রোজ রোজ লাল চা খাবেন। দুধ কেনার টাকা হবেনা! আমি ঠাঠা মারা হাসি দিয়ে তাকে লাল চার গুনাগুন বুঝাতে চাইলে সে শুধু মিট মিট করে হাসত। সব কথা শেষ হলে মাথা নাড়তে নাড়তে সামনে থেকে বিদায় হত। মাথা নাড়াড় ভঙ্গিটায় স্পস্ট বুঝা যেত তার মনের কথা... আপনেরে দিয়া কিছুই হবেনা টাইপ মাথা নাড়ানো। অফিসে ওই কাদির মিয়া ছাড়া আর কেউ আমারে পাত্তা দেয়না। এমনকি যার

:: মৌলীর বাবার চোখ ::

Image
গাদাগাদি ভিড়ে আমি দাঁড়িয়ে থাকি। আমার ঠিক পাশেই দাঁড়ান জননী এক। পিঞ্জরায় বন্দি পাখি তার চোখ ভরা জলে তাকায় শীর্ন জননীর মুখে। বড়ই আকুলি তার যদি ছুঁয়া যেত জননীর হাত, যদি সেই হাত একবার আদরে আদরে তারে মায়ায় ভরিয়ে দিত... মানুষের মুখ গুলো বড় অসহায় আর আমিও যেহেতু মানুষ তাই শুনি তেলের লিটার আশি টাকা... চাল কেনাও বড় কষ্ট... তুই কেমন আছিস বাপ... আব্বা রোজ রাতে কারা যেন ঘরের চালে ঢিল ছুঁড়ে... এক দাগী আসামীর সাথে দুর্বল শরিরে ধাক্কাধাক্কি করে আমার সামনে এসে দাড়ান আরেক ভয়ঙ্কর চাঁদাবাজ! মৌলী ফোনে বাবাকে খোজ করে কীনা জানতে চান...

:: দুধ ভাত খেয়ে রোজ রাতে চাঁদ দেখি ::

সর্বত্রই নাকি ইদানিং বহে শান্তির সুবাতাস, ইদানিং নাকি হররোজ পূর্নিমা ভর করে আমাদের আকাশে আর আমরা নাকি প্রতিদিন করি কুর্নিশ মহামান্যকে, বলি বড় ভাল কাটে আমাদের দিবারাত তোমারই রাহে হে মহান। আমরা কেউ কেউ স্বপ্নবাজ হয়েছি, জেগে জেগেই দেখি দুধভাতে ভরে গেছে আমাদের থালা আর আমরা চিমটিও কাটিনা নিজের শরিরে সত্য যাচাই করতে হয়না। বেহেস্তি পোষাকের রঙ নাকি সবুজ আর দোজখের কালো! কবে কোন মোল্লা শিখিয়েছে এমন বচন! মোল্লারাও আর এখন তমদ্দুনের গান গায়না। সকল রঙের পোষাকেই নাকি শান্তি আছে, আছে বেহেস্তের ছটা অচিরেই জারি হবে এমন ফতোয়া।

:: আমার এখন আকাশ ছুঁতে ইচ্ছে করে ::

তোমার মত আমারও এখন যখন তখন ভালবাসতে ইচ্ছে করে যখন তখন হাত বাড়িয়ে আকাশ থেকে মেঘের ভেলা সরিয়ে দিতে ইচ্ছে করে। এই আমার আর আগের মত মিছিল নিয়ে সামনে যেতে মন টানেনা। মানুষ ডাকার কাজগুলোতো আগের মত জোর পাইনা। কে মরলো কে বাঁচলো কার জন্যে কার কপাল পুড়লো এসব নিয়ে ভাবতে আমার মোটেই ভালো লাগেনা মানুষ আমি গড়পড়তা, এমন ভাবনায় সময়দিতে একটুও আর ভাল্লাগেনা তুমি আমার মাথার ভেতর ঢুকিয়ে দিলে একটা আকাশ আমি এখন এই আকাশের তারা গুনি, ফেলে আসা সময় নিয়ে আর ভাবিনা। দুনিয়া গেলে যাকনা চুলোয় আমার ভেতর জ্বলছে আগুন সে আগুনে কাউকেই আর ভাগ দেবনা।

:: বুকের উপর সাপের রাস্তা... ::

ক. ইশপের গল্প টাইপের একটা গল্প বারবার আমার মনে পড়ে। একবার এক লোকের বুকের উপর দিয়ে সাপ চলে গেল। লোকটার সেকি কান্না। কেউ একজন বলে, আরে ভাই কাদেন কেন? সাপটাতো কামড়ায়নি। সেই লোক বিষন্ন হয়ে বলে, আরে ভাই কামড়ানোটাইতো ভালো ছিল, এতো এখন রাস্তা বানিয়ে ফেল্লরে ভাই! মানুষের বুকের উপর দিয়ে সাপের রাস্তা... লোকটা আবার বিলাপ শুরু করে। খ. মঙ্গলবার রাতের ঘটনা। রাত দেড়টা পৌনে দুইটা হবে। বাড়ির সামনে যেতেই বুঝে গেছে তুলি। বাড়িটা ছোট একটা টিলার উপর। সেটা উঠতে উঠতে ও বেরিয়ে এল। আমার বেগে চাবি থাকে। সেটা দিয়েই গেট খুলি। বাবাই ঘুমে। ওর ফিডার রেডি করতে করতে ভাত খাবো কিনা জিজ্ঞেস করে তুলি। বলি, খাবনা। কয়েকটা কাজ জমে গেছে। দ্রুত কম্পিউটার খুলে বসি। লো-ভলিউমে গান ছেড়ে ঠুকে ঠুকে ইলাসট্রেটর সামলাই। টুকটাক কথা হয় দু'জনে। গরম পড়েছে প্রচন্ড। জানালা খুলা। ফিডারটা পাশে রেখে মা ছেলে তারা ঘুমিয়ে পড়ে। মিনিট পনের হবে। চিৎকার। চোখ মুখ কি রকম যন্ত্রনামাখা, কোলে বাবাইকে নিয়ে কাপতে থাকে। কি হয়েছে, কি করব কিছুই বুঝিনা... কিংকর্তব্য শব্দটা খুব কাছে এসে টোকা দেয় আমায়। ততক্ষনে বাবাই ফর্মে চলে এসেছে। সে ভেবেছে আমি তার মাকে গভি

:: বৃষ্টি পিয়াসি আমি আর শাহানা ::

বৃষ্টির দিন ছিল, রাতেও ছিল বৃষ্টি। আমাদের মাঝে যাদের বৃষ্টি প্রীতি ছিল তারা ছাড়া আর সবাই বিরক্ত। টানা বৃষ্টি কারইবা ভালো লাগে। আমি বৃষ্টি পিয়াসি মানুষ। মেঘ আমায় মাতাল করে। আমি মেঘের ছায়ায় দাঁড়াতে পছন্দ করি। বৃষ্টিতে ভিজি বালক বেলার উল্লাসে। শাহানার সাথে দেখা হয়। সেও বৃষ্টিময় দুপুরে। আমি হাটছিলাম কংক্রিটের রাস্তায়। মানুষের সাথে মানুষের সহজে ঘেষাঘেষি হয়না এমন রাস্তা। তবু হঠাৎ কেউ একজন আমার শরীরে হামলে পড়ার মতই আচরণ করে। সামলে নিয়ে তাকাই। শাহানা! বদলে যাওয়া শরির নিয়ে দাড়িয়ে আছে আমার সামনে। শাহানা, আহা শাহানা। আমার নিঃশ্বাসের মত প্রিয় ছিলে তুমি। আমার বুকে তোমার জন্যই জমে আছে গাঢ় এক বেদনা। শাহানাদের পুকুরে শানবাঁধানো ঘাট ছিল, তাদের তিন মহালা বাড়ি ছিল। আমি সেই বাড়িতে কতবার গিয়েছি। গ্রাম থেকে উঠে আসা নিতান্ত এক কিশোরের জন্য সে বাড়ি ছিল আরামদায়ক নিঃশ্বাসের মত। সে বাড়িতে শাহানা ছিল। শাহানার সাথে দেখা হলে মেঘ মেঘ দুপুরে সে আমাকে নিয়ে পাশের ষোলতলা বাড়িটার দিকে হাঁটা দেয়। আমি কোন কথা না বলে তাকে অনুসরণ করি। আর অবচেতন মনে চাপা ফুলের ঘ্রাণ খুঁজি। শাহানার কাছে গেলে সেই কৈশোরে আমি চাপা ফুলের ঘ্রা

:: মেঘ মেঘ দিনে বেলাদি ::

মেঘ মেঘ দিনে আমি আবারও ফিরে যাই হাওরপারের শৈশবে,আমি তখন আমি ছিলামনা ছিলাম জলের সন্তান এক, আমার পায়েরসীমানায় ছিল কোমল পলির বিস্তার, চোখের ছিল অবাধ স্বাধীনতা,আমি তখন আমি ছিলামনা ছিলাম মাটির সন্তান। বৃষ্টি ধোঁয়া সকাল ও দুপুরে আমি বারবার বেলাদির কাছে ফিরে যাই বেলাদির মেঘবর্ন চুলের আশ্চর্য ঘ্রান আমায় আচ্ছন্ন করে আমি সারি সারি কদমের ভেজা শরিরে শৈশব খুঁজে পাই, আমি আমার লাটিম খুঁজে পাই বৃষ্টির বিকেলে আমি চোখ খোলা রেখেও বিভোর হই। বেলাদির হাত আমার আবিন্যাস্ত চুলে বিল কেটে বলে, যা অপু নলুয়ার হাওরের জলে মিশে যাওয়া আকাশের কার্নিশে জেগে ওঠা রঙধনু থেকে সিঁদুরের মত একটুকরো লাল রং নিয়ে আয়, আমি কপালে পরব...

:: সন্যাসে তোমাদের এতই ভয়, আতিপাতি করে বুকে আমার জন্য ভালবাসা ::

Image
সেইযে বালিকা ছিল এক, দুই বিনুনি ছিল চুলে তার। আমি কতকতবার তারে মন থেকে মুছে ফেলি আর সে বারংবার থেকে যায় আমার মনে। আমার শুধু চোখে ভাসে মনে ভাসে রমনীর সিঁথির মত মাঠের বুকে জেগে ওঠা হাটাপথে দুজনে আমারা দুজনকে আলতো পায়ে পেছনে রেখে হাটতে শুরু করলে হঠাৎ হঠাতই সে পেছন ফিরে প্রশ্ন করেছিল, কোথায় যাবে এখন... মনে অমন তোফানতোলে এমন প্রশ্ন আমায় কেউ আর কোনদিন করেনি তবে কেন আমি সেই দুই বিনুনির কথা ভুলে যাব তবে কেন আমি সেই রমনীয় সিথির সবুজ মাঠকে ভুলে যাব তবে কেন আমি সেই মায়াময় চোখ থেকে পালিয়ে বেড়াব নদীবর্তি সেই করুনা আমায় আর কতবার পোড়াবে যতটা না পোড়ালেই নয় ততটাতো আমি আগেই পুড়েছি তবে কেন আজ এইসকল পাথুরে আয়োজন! আজ কেন সকল প্রিয় মানুষ ভালবাসা নিবেদিতে আমারে এমন করে তুলে উচাটন। আজ কেন আমি আর আগের মত পুরনো সেই নদীবন্দরের খেয়াঘাটে বসা ছোট দাদার মত সাদা চোখ মেলে সন্যাসের কথা বলতে পারিনা

:: অর্না বন্ধু আমার ::

Image
সে বড় মায়াবতী ছিল। সে ছিল ছায়াময় বৃক্ষের মত। আমার যত অপরাধ কতদিন আগলে রেখেছে বন্ধু আমার। আমার কত নাঁকি কান্না মুছে দিয়েছে মমতায়। আমি আর কত কাঁদতাম যতটা কাঁদিয়েছি তারে! আমাদের শৈশবে কত বেলীফুল আর গোলাপের পাপড়ি ছড়ানো ছিল উঠোনে উঠোনে। আমরা হেটেছি ছায়ায় ঢাকা কত কত পথ। আমরা মায়ায় বেধেছি আমাদের কত কত শৈশব। এখনও আমাদের পথগুলো আগেরই মত আছে, আমরা তবু হাটি অন্য পথে, অন্য আগুনে পুড়ি আর দুর থেকে বলি ভাল থাকিস।

:: তখনও ঝরেনি পাতারা, বেলাদি ছিল ::

Image
বেলাদির মাথায় একরাশ ঘনকালো চুল ছিল। রাজের বিস্ময় মাখানো একজোড়া চোখ ছিল তার। তখন অবশ্য অতটা বুঝতামনা। শুধু চোখ গুলো দেখতে আমার ভিষন ভালো লাগত। আমাদের বাড়ির উত্তর সীমানায় ছিল একসারি কদম গাছ। তার পরই শুরু বেলাদিদের বাড়ি। সীমানা থেকে ঘর অবধি যেতে বেশ লম্বা একটা ফাঁকা যায়গা ছিল। মখমলের মত বিছানো সবুজ সবুজ সেই ঘাসের মাঝখানে ছিল বেশ বড় একটা পাথর। অনেকটা বেদীর মত। সাদা রঙের সেই পাথরে বসে রোজ বিকেলে বেলাদি রবীন্দ্রনাথের বই পড়ত। মাঝে মাঝে সুনীল। রোজ বিকেলে আমরা সব বালকের দল সেই ফাঁকা যায়গায় খেলা করতাম। গোল্ল্লাছুট খেলা হত। পাথরের সেই বেদীটাকে কেন্দ্র ধরে আমরা ঘুরে ঘুরে ছড়া বলে একসময় দিতাম ভু দৌড়। আমরা আসলে বেলাদিকে ঘিরেই ছড়া কাটতাম। এটা একেবারেই আমার বালক বেলার কথা। ওই বয়েসে আমরাতো আর দুরে কোথাও যেতে পারতামনা। তবে আস্তে আস্তে আমাদের দৌড় বড় হতে থাকে। বেলাদিকে ঘিরে ছড়া বলার সময় ফুরুতে থাকে। গ্রামের শেষে যে মাঠ, তারও পরে যে পরিত্যাক্ত জমিদার বাড়ি। সেইসব গলিঘুপচিতে ভাগ হতে থাকে আমাদের শৈসব। কনক, নিলু, রাজু সবাই খুব সহজেই রোজ রোজ চলে যেত সেইসব অচেনাকে চিনতে। আমার যাওয়া হতনা। কি এ

:: সময়, ইদানিং ::

Image
সময় বড় সংক্ষিপ্ত এখন বামুন-বনসাই জামানা। উদ্যানে বিপনী বিতান পেটের ভেতর মিনি চিড়িয়াখানা। প্রকৃতির উৎসবে মুঠোফোন বাণিজ্য। শর্ট ম্যাসেজ; ঘন্টা বাজে: চিঠির মৃত্যু। এখন আধুনিক রিমিক্স হাছন, কান ঝালাপালা করে ডিজিটাল ফিউশন।

:: সেইসব সময় অথবা তুমি বিষয়ক অথবা কিচ্ছুনা ::

Image
আমার তখন না ঢাকা না সিলেট অবস্থা! আরিফ ভাই, নিজের ভাই, রনি ভাই এমনতর ভাই এবং সঙ্গিয় গৌরী, চেরী, রাজুরা প্রায় প্রতিদিন টানছেন মহানগরের দিকে। সেখানে নাকী আছে আমার জন্য অবারিত প্রান্তর। আমার সকল প্রতিভা(!) বিকষণে সেই নগরীই হবে প্রকৃষ্ট স্থান! এদিকে প্রাণের শহরে আছেন জননী আমার, আছেন শিশুমনের পিতা। আছে আমার প্রান্তিক। আছে সবুজ ঘনবন, জাফলং টাঙ্গুয়া...। আছে অর্ণা নামের এক মানবী!!! সাথে সাথে আমারই মত বিষয় বুদ্ধিহীন একদঙ্গল বালক বালিকা!!! ঘরে আবার মাঝে মাঝে কানাঘুষা হয়। সাতসমুদ্র তের নদীর পারের নিকটজনেরা বলেন, চলে আস জাদুধন, পাবে সফেদ স্নেহ আর স্নো...। এমন এক সময় শহর সিলেটে কতিপয় মানুষ দাড় করাতে চায় পত্রিকা। আমাদের টুকুদা তখন যে কোনভাবেই আমাকে ধরে রাখতে চান শহর সিলেটে! আমি বলি তাইলে একটা চাকরি দেন। বেকার হয়েত আর থাকতে পারিনা! তিনিই খবর জানান সেই পত্রিকার। বিজ্ঞাপনও জোগাড় করে নিয়ে আসেন তখনকার ঘরবাড়ি প্রান্তিকের টিনশেড বারান্দায়। অর্ণাতো মহা খুশি। আমাকে বুঝায়, সবাই চলে যাক, আমরা দুই বন্ধুতে এই শহরকে আগলে রাখব!!! সেই বালিকা এখন নগর ছেড়ে বৈদেশের পথে পথে ঘুরে ইচ্ছেমত!!! চাকরিটা হয়ে যায়। আমিও পড়ি স

:: হাবিব আলীর পতাকা পুরাণ ::

হাবিব আলীর শখটা অনেক দিনের। বুকের মধ্যে যত্নে লালন পালন করতে করতে পুষ্ট শখ কখনও পুরন হবে কিনা এই নিশ্চয়তা না থাকলেও হাবিব আলী স্বপ্ন দেখার হাল ছাড়েনি। সে স্বপ্ন দেখেই যায়। শখ পুরনের স্বপ্ন।মানুষের সকল ইচ্ছা পূর্ন হয়না। তবু মানুষ নতুন নতুন ইচ্ছা নিয়ে মেতে উঠে। অনেকেই পুরনো শখ ভুলে যায়। কিন্তু হাবিব আলী ভুলেনা। যতদিন যায় শখ বাড়তে থাকে, তাতে চেকনাই লাগে। শখের জেল্লা বাড়ে। শখ পুরনের ফন্দি ফিকির আবিস্কারে ব্যয় হয় হাবিব আলীর রোজকার কিছুটা সময়। কিন্তু সফল লভেদী বুদ্ধি আবিস্কার করা হয়ে উঠেনা।অবশেষে এল বুদ্ধি। শানদার এক বুদ্ধি। যখনই এই বুদ্ধিটা মাথায় আসল তখনই শুরু হল সমস্যা। নিজের মাথার চুল নিজেই ছেড়া শুরু করল হাবিব আলী। এই ব্যপারটা এতদিন ধরে ঘটছে বাংলাদেশের ঘরে ঘরে আর তার মাথায় কিনা এতদিন পরে আসল! নিজেকে সে কুৎসিত ভাষায় গালি দিতে লাগল। একসময় হাবিব আলীর মাথা ঠান্ডা হল। সে তার শখ, তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করতে বসল। কিন্তু সেটা মোটেই সহজ নয়। দিব্যওচাখে নিজেন স্বপ্নের রুপায়ন দেখে তার মনের ডুগডুগি অবিরাম বাজতে থাকায় মন ও মগজকে পুরুপুরি শিতল করা যায়না। অবশেষে অনেক চেষ্টায় হাবিব আলী তার কর

:: ওতটা পুতুপুতু নাই আমার যে পথের কান্নায় বুক ভাসাব স্বপনের জন্য ::

Image
আমার অনুভূতি অতটা পুতুপুতু নয়। যতটা হলে পথের কান্নায় বুক ভাসানো যায়। বেশ শক্ত ঘোচের মানুষ আমি থেতলে যাওয়া মানুষের সামনে বসে তারই স্বজনকে প্রশ্ন করতে পারি, মাথায় যখন গুলি লাগে তখন উনার হাতে একটা পিস্তল ছিল, সেটার মালিক কে জানেন? ক্রসফায়ারে মরা মোশারফের মাকে বলি, আছে আপনার ছেলে হাসপাতালে... আচ্ছা ওর কোন ছবি আছে আপনার কাছে। ত্রস্ত হাতে মোশারফের বোন পাসপোর্ট সাইজের ছবিটা বের করে দিলে আমি খুব দ্রুত চলে আসতে পারি। যদিও আসার আগে বলে আসি, তাড়াতাড়ি হাসপাতালে চলে যান। ওসমানীর ইমার্জেন্সিতে... একসময়, কোন এক সময় নাটকের ঘরে আমিও ছিলাম। আমিও ছিলাম নতুন কবিদের ভিড়ে দাড়ানো এক পথিক। সেসব আর আমাকে এখন অতটা টানেনা। যতটা টানে বাদশাহ ফখরুদ্দিন। আমি আর সে পাড়াতে যাইনা। বালিকাগুলোকে বেশ্যা বলিনা যদিও নটী বলতে দোষ কী? আমি আর কবিতার পথে হাটিনা। অতটা দম আমার নেই যতটা দম থাকলে আবুল হাসান হওয়া যায়। আমিও হয়ত ছিলাম স্বপনের পরিচিত তালিকার কোন এক মানুষ। মাঝে মাঝে খবর পাঠালে কিংবা কবিসুলভ বৃষ্টিতে ভিজে মাথা ধরালে আদা দিয়ে মগ ভর্তি চা আমাকেও দিয়েছে মমতায়, স্বপন মাহালি। স্বপন মাহালি কী ছিল আমাদেরই একজন। জানিনা। এসব আর খ

নতুন করে পুরনো শব্দ

Image
আমাদের ঘরময় বাতাসের মত টইটুম্বুর হয়ে ছিল বিষন্নতা সেখানেই এলে তুমি, কাঁদলে, তাকালে, হাসলে, হাসালে কোন ফাঁকে বিষন্নতা ছাড়ল ঘর, টেরই পেলামনা। তুমি হাটলে, দৌড়ালে আমরা ভুলেই গেলাম বিষন্নতা বলে একটি শব্দ আছে বাংলা অভিধানে জ্বরগ্রস্ত তুমি যখন লাল চোখ নিয়ে বলো কমলা রঙের ইঁদুরটা তোমার নীল জামা খামচে খেয়ে ফেলছে! আমরা আঁতকে উঠি! ঝুপ করে ঘরে ঢুকে পড়ে বিষন্নতার শকুন তুমি এমন করে পুরনো ভুলে যাওয়া শব্দগুলো আমাদের মনে করিয়ে দিওনা বাবাই...

৭ মার্চ

কি এক ঘোর লাগা কবিতা... কি এক নেশা জাগানিয়া উচ্চারণ। কি এক ভালবাসা খেলা করে শব্দের পরতে, জেগে ওঠে জনমানুষ...

:: আমার কিছু এলোমেলো সরল মৌলবাদী ভাবনা ::

আমার কিছু সমস্যা আছে। অনেকেই বলেন। আমিও মাঝে মাঝে অনুভব করি। তবু সমস্যাগুলো পুষে রাখি। গোয়ার্তুমি ধরে রাখি। আমার একটা গোয়ার্তুমি লোকগান বিষয়ক। বলা যায়, লোক কবি বিষয়ে। এদরকে যখন ভাংচুর করা হয়। তাদের গান চুরি করা হয় কিংবা একটু আধুনিক প্রলেপে হাজির করা হয়, আমার সেটা খারাপ লাগে। আমি অশ্লিল হয়ে উঠি। মরমি সাধক হাছন রাজা। এ নামেই পরিচয়। আলাদা সূর আর ভাব নিয়ে তিনি বিরাজ করেন আমাদের গ্রাম্য জীবনে। মফস্বলি আমরা তাকে মনে করি আমাদের একান্ত মানুষ। যদিও তিনি ছিলেন জমিদার, রাজা রাজড়া, সামন্ত প্রভু। তবু ভাবের মানুষটা হয়ে যান আমাদের মতো প্রান্তজনদের। আমরা শুনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সুশিলের দরবারে (তখনও কী এভাবে সুশিল সমাজ বলে চিৎকার চলত ) হাছনকে পরিচিত করেছিলেন। আমার কেমন লাগে। কবি গুরুর প্রতি শ্রদ্ধা রেখেও মানতে পারিনা তার জবানিতে বলা পূর্ববঙ্গের গ্রাম্য কবি শব্দ গুলো। কেমন এক বেদনা জাগায় মনে। মন বলে, তুমি কি কবি আমার গ্রাম্যতাকে হেলা করলে। অপ্রাসঙ্গিক হল কিনা বুঝতে পারছিনা। আমি শুধু আমার বোধের কথা বলি। ব্যক্তিগত বোধ। একই ভাবে গায়কিতেও আনা হচ্ছে আধুনিকতা। হাছনের গানের প্রধান উপাদান হল একবারেই আঞ্চলি

দেয়ালের দাগ

Image
দেয়ালের এক পাশে ছাপ্পান্ন নাম্বার দাগ দেওয়ার সময় দরজায় ঠক ঠক করে আওয়াজ হলো। দাগটা টেনে মতিন সাহেব দরজা খুলে দিলেন।'চাচা আমাকে চিনতে পারছেন? আমি সাইদ, রনজুর বন্ধু।'মতিন সাহেব কোনো কথা বললেন না। কিন্তু সেদিকে সাইদের খেয়াল নেই। সে নিজেদের পরিচয় দেওয়ায় ব্যস্ত_ 'আমার কথা কি আপনার মনে পড়ছে না? সিলেটে আপনাদের আর আমাদের বাড়ি ছিল পাশাপাশি। আমার বাবা তারাপুর চা-বাগানে চাকরি করতেন।' তারাপুর চা-বাগান কথাটা মতিন সাহেবের মাথায় ঢুকেছে। এর আগে সাইদ যা বলেছে তিনি তার কিছুই শোনেননি। এমনকি তিনি ছেলেটাকে চিনতেও পারছেন না। হঠাৎ তার খেয়াল হলো_ তিনি ওর কথা যেমন শুনছেন না, তেমনি বলছেনও না কিছু। তাই প্রশ্ন করলেন_ 'তুমি এখন আসছ কোত্থেকে? প্রশ্নটা করে একটু অস্বস্থি হলো, তুমি বলাটা কি ঠিক হলো...! 'চাচা সিলেট থেকেই আসছি।' মতিন সাহেবের অস্বস্তি কেটে গেল। চাচা বলছে যখন তখন ্তুমি বললে সমস্যা হবে না। আর অস্বস্তি কেটে যেতেই তিনি সাইদকে চিনতে পারলেন। সাইদ, রনজুর বন্ধু। গিয়াস উদ্দিন সাহেবের ছেলে। ওর মা, পারুল ভাবী। খুব সুন্দরী ছিলেন। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম পায়েস রাঁধুনী। রনজু আর স

জলজ বিষন্নতা

অনেকের মাঝে থেকেও আমি ঠিক ঠিক একা হয়ে যাই জলের মায়ায় বেড়ে উঠা জলজ বৃক্ষের মত মাছেদের সাথে ভেসে থেকেও প্রজাতি ভিন্ন

বৃষ্টি অথবা তোমার বন্দনা

পেজা তুলোর মতো বৃষ্টি ঝরছিল অথবা, মখমল বৃষ্টি... অথচ আকাশের রঙ বৃষ্টিরঙা নয় আশ্চর্য অন্য আলোয় রাঙা বারান্দায় দাঁড়িয়ে তুমি হাত বাড়ালে সিঁড়ির ঠিক পাশে খুলে রাখলে স্যান্ডেল কংক্রিটের উঠোনে হেটে গেলে কোমল পায়ে একবারও আমার দিকে তাকালেনা বৃষ্টির কণা স্পর্শ করছে তোমার চোখের আলো ...বড় ইচ্ছে হয় বৃষ্টি হতে... ...বড় ইচ্ছে হয় বৃষ্টি হই...

আমার বাবাই

Image
সকাল আটটায় তুলি ডাক দেয়। চোখ টেনে মেলে দেখি সোঁনাজান মাথাটা মায়ের বুকে চেপে পা'টা তুলে দিয়েছেন বাপের উপর। আদর করতে ইচ্ছে করে। ঘুম মুখে এগিয়ে যাই। ফিরিয়ে দেয় তুলি। ইশারায় বলে ফিডারটা দাও... এটাই নিয়ম। রাজপুত্রকে ঘুমের ঘোরে না খাওয়ালে আর খাওয়ানো যাবেনা। পা টিপে টিপে ডাইনিং রুমে যাই। কষ্ট করতে হয়না। আম্মা জেগে উঠেছেন আগেই। ... দাদু ভাইয়ের জন্য দুধ বানিয়ে দেন। কোনমতে মুখে পুরেদিই... তিনি টানেন ঘুমের ঘোরে। আমি আবারও তন্দ্রাচ্ছন্ন হই! নয়টা তিরিশে আবারও ডাক পড়ে। ধুন্দুমারের শুরু। তাড়াহুড়োয় কাটে ১৫ মিনিট। পুত্র জেগে উঠেছেন ততনে। তিনি পরম মমতায় আচড়ে পাচড়ে মুখের দু এক যায়গায় জানান দিয়ে দেন। আমি শুধু আহাদিত হই আর বৌকে দেই তাড়া! সোনাজান ইনিয়ে বিনিয়ে কত গল্প করতে চায়... আমার সময় নাই! বলি, বাবাসোনা দাদু তোমায় ডাকে। কিংবা দাদাভাইকে ডেকে বলি, ওরে একটু সামলাওতো। কেমন অভিমান নিয়ে সরে যায় সে। টোনা-টুনি বেরিয়ে পড়ি চুরি করে, ফাঁকি দেই বাবাইটারে... ব্যাস্ত রাস্তায় ছুটে দুই চাকা... বৌকে নামিয়ে দিয়ে চল নিজের গন্তব্যে। শুরু হল যন্ত্রের জীবন। নিউজপ্রিন্ট... কম্পিউটার... প্রেস... এ্যাসাইনমেন্ট... ফোন... প্

জ্বরগ্রস্থ বাক্যবিন্যাস

১. কৈশোরের জ্বরে মরে যাওয়ার ইচ্ছে হত। এখন শুধু তোমার কাছে আসতে ইচ্ছে করে। ২. যতই গভীরে যাই কোমল কোমল কোমল পলি আমি চাষে মাতি... ফসলের ঘ্রানে মেতে উঠুক উঠোন তোমার আমার অতিথি বলেছেন : ২০০৭-০২-০৩ ০৮:২২:২০ দ্্বিতীয়?ভাল হইছে। চুপেচুপে আসেন আর গ্যাপে গ্যাপে দেখা হয়! ঘটনাটা কি? নজমুল আলবাব বলেছেন : ২০০৭-০২-০৩ ০৮:২৫:৩২ ধন্যবাদ,একটু সমস্যায় ছিলাম কৌশিক ভাই। ঝামেলাময় জীবনরে ভাই। মাহবুব সুমন বলেছেন : ২০০৭-০২-০৩ ০৮:২৬:০৪ ঘটনাটা কি ?ভাবীরে কয়া দিমু ! আলভী বলেছেন : ২০০৭-০২-০৩ ০৮:২৬:০৬ জটিল হইছে ম্যান। নজমুল আলবাব বলেছেন : ২০০৭-০২-০৩ ০৮:৩১:৩৭ মাহবুব ভাই ডর দেখান কেনরে ভাই?আলভী: মানুষের চোইতেওকি বেশি জটিল? অতিথি বলেছেন : ২০০৭-০২-০৩ ১০:১১:৪৭ কঠিন................তয় মানুষের মত নয়...... নজমুল আলবাব বলেছেন : ২০০৭-০২-০৩ ১১:০৪:৪৭ ঘটনাটা কী? সবাই বলে কঠিন, জটিল...!এরচেয়ে সহজ আর কী হইতে পারে...ধন্যবাদ আবু সালেহ অতিথি বলেছেন : ২০০৭-০২-০৩ ১১:২৭:০৬ সেই যে নাই হইলেন আর দেখা মিললো এখন।পোলার কি অবস্থা? নজমুল আলবাব বলেছেন : ২০০৭-০২-০৩ ১১:৩০:৩৯ ভাল এখন।আসলে বুঝলাম এখন কতটা জড়াইছি জীবনের প্যা

:: চন্দ্রাবতী বিষয়ক ::

রৌদ্র ছায়ায় এত খেলা আকাশে, চন্দ্রাবতী তোমার আলো ছায়ায় সব খেলা ম্লান। কী করে বলো তুমি আসবেনা আমার কাছে! চোখে ঠিকই আদর ঝরে পড়ে তোমার। মুখে বল 'না'। চন্দ্রাবতী অতটা বেদনা কীভাবে পোষ ভেতরে তোমার! অমন বেদনাকীভাবে দাও আমায়! তোমার নিরবতায় আমাকে স্পর্শ করে মৃত্যুর শীতলতা।

::বউ, বাটা, বল সাবান::

Image
সমস্যা শুরু হয়েছিল বিয়ের দিনেই। শ্বশুর বাড়ির লোকজন দাদাকে মাত্র এক হাজার টাকা নজরানা দিলো! খেপে গেলেন মা, বাবা, বড় চাচা...। ভাবী যে শো-কেস এনেছে সেটার তাকগুলো কদম কাঠের। সোফার ফোম খুব বাজে, দুদিনেই বসে যাবে। ড্রেসিং টেবিলটার ডিজাইন সেই মান্ধাতা আমলের। আরো কতো ভেজাল যে আছে.....! ভাবীর অনেক খুঁতও বেরুতে লাগলো। কথা বলে কেমন করে, তিন বাড়ির মানুষ শুনতে পায়!ঠা ঠা করে হাসে। বাপের বাড়ির এতো অপরাধের ব্যাপারেও তার কোনো বিকার নেই। এমন ভাব দেখায়...! যেন কিছুই হয়নি... এরকম হলে কার না খারাপ লাগে! শরীর জ্বলবে না কার? আর দাদাও এমন ভেড়ুয়া! বউ এতো বেহায়ার মতো চলে তবু কিচ্ছু বলবে না। যেন কিছুই হয়নি। বিয়েতে এতো অপমান, আর সে মিন মিন করে বলবে, 'থাক এসব নিয়ে কথা বাড়িয়ে আর লাভ কী!' কোনো আত্মসম্মান নেই। দু'দিনেই বউয়ের আঁচলের তলে ঢুকছে! আমরা কেউ ভাবীকে পছন্দ করি না। আচরণেও সেটা বুঝিয়ে দেই। কিন্তু ভাবী সেটা গায়েই মাখে না। আর নিজেকে জড়াবে সবকিছুতে। আমরা হয়তো বসে গল্প করছি বা খেলছি, এসে বলবে_ 'আমিও খেলবো তোমাদের সঙ্গে...। 'বাবা বাটার জুতা পরেন। প্রাচীন ডিজ

ব্যক্তিগত ব্যাখ্যান

আমাদের সুসময়ে সহবাস নামের ছোট গল্পের একটা কাগজ বেরুত। হাসান মোরশেদ ছিলেন সম্পাদক। সাথে ছিলাম নিলাঞ্জন দাশ টুকু, আরিফ জেবতিক, আসিফ মনি, অর্জুন মান্না, সুরঞ্জিত সুমন, অর্ণা রহমান, জাকির আহমদ চৌধুরী, রিয়াদ আওয়াল এবং আমি। সহবাস এর চতুর্থ সংখ্যায় ছাপা হয় ব্যক্তিগত ব্যাখান । ছাপাখানা থেকে আসার পরই বড় ধরনের কয়েকটি অসংগতি আবিস্কার করি আমি। মন খারাপ হয়ে যায়। কিন্তু কামান দাগা শেষ। তাই আর ঘাটাইনি বেশি। সাত বছর পর কিছুটা শুধরে নিলাম আজ। ;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;; প্রাইমারি স্কুলে একটা বিষয় ছিল ছবি আঁকার। বাংলা স্যার মাঝে মাঝে কিছু একটা আঁকতে বলতেন। আমরা আলতো হাতে তা আঁকতাম।ক্লাস বলতে এই পর্যন্ত। কিন্তু পরীক্ষার সময় ছবি আঁকার আলাদা পরীক্ষা ঠিকই হতো। পরীক্ষার দিনে ক্লাসের সবাই রঙ, রঙ পেন্সিল, তুলি, স্কেল কত কি নিয়ে আসতো। ...আমার সে সব নেওয়া হতো না। বড় আপা কচি সীমপাতা তুলে দিত বেশ কটা, সাথে বাবার লাল কালির কলম। আর আমার লেখার কলমটাতো থাকতই। এ জন্য আমার আঁকা ছবি সব সময়ই তিন রঙের হতো। কচি সীমপাতা সবুজ, লাল আর কালো নয়ত নীল এই তিন