Posts

Showing posts from 2008

ব্যবধানে বাড়ায় শঙ্কা: বিচারের কথা কি বলা হবে এইবার?

ভুমিকা ছাড়াই শুরু করি। এতটা ব্যবধান কি আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম? মনে হয় না। কিন্তু সেটাই ঘটেছে। ২৬২'র বিপরীতে ৩০। হারাধন মোজাফ্ফরের এক ছেলে ছিলো ৭২ এ। এবার অবশ্য তারচে ভালো অবস্থা বিরোধী শিবিরের। এই ব্যবধানই বাড়ায় শঙ্কা। আমরা কেমন আগামী পাবো? সংখ্যার এই আধিক্য কি আমাদের অন্য আরেক ভূবনে ঠেলে দিতে পারে? ইতিহাস কি বলে? এইসব গরিষ্ঠতার ফল কি? চিন্তার ক্ষেত্র যাদের প্রসারিত, যারা পাঠ নিয়েছেন ইতিহাসের, তারা কি বলেন? খুব জানতে ইচ্ছা করছে। জেনে নেয়াটা প্রয়োজন বোধ করি। ইতিহাসের পাঠ থেকে আমি এই জেনেছি, হিটলার নির্বাচিত হয়েছিল... মাথার ভেতরে শুধু ঋনাত্মক পাঠ। বার বার মেঘ এসে ভর করে মনের আকাশে। পরিবর্তনের গতিধারা কেমন হবে? যারা আসছে তারা আমাদের দায়িত্ব নেবেন, না ক্ষমতায় বসবেন? নিরব বিপ্লবের গোপনে যে দাবী, যে দাবী প্রবল নিয়েছে রূপ ৩৭ বছর পরে, তার কি হবে? বিচারের কথা কি পুনর্বার ভুলে যাবে প্রিয় বাংলাদেশ? এইসব প্রশ্নের কোনো উত্তর মিলেনা। ভেতরে নানান উপমা আসে, ভয়ের, শঙ্কার। আমরা কি আশ্বস্থ হবো প্রিয় মাতৃভূমি? .......................... এই পোস্টটা করা হয় সচলায়ন এ। সেখানে অনেকেই মূল্

বেঁচে আছি, দেখে যাও

প্রত্যাবর্তনের পথে নাকি কিছু কষ্টলি অতীত থাকে। বলেছিলেন প্রিয় কবি হেলাল হাফিজ। সেই প্যত্যাবর্তনের পথে আরেক প্রিয় কবির কণ্ঠস্বর ধার করে আজ আমি বলি, শুনে রাখো সবে, আলবাব মরে নাই। তবে কি তাহার মৃত্যু হয়েছিল? সেইসব সময়ে আমি মৃত্যুকে ধারন করে ছিলাম। অথবা বেঁচে থাকার প্রাণান্তকর চেস্টা। নিতান্তই অবহেলায় বছরেরও অধীককাল আগে যারা যারা আমারে ছুড়ে ফেলে দিলে, তারা একবার দেখে যাও এসে আলবাব কি অসাধারণ ভাবে বেঁচে উঠেছে আবার। ভয়ংকরভাবে পতিত আমাকে মনে রাখে নাই কেউ। কালো, হলুদ তালিকায় উঠেছিল নাম। কিভাবে বেঁচে ছিলাম, বাঁচলাম, কেউ খোঁজ নেয় নাই। আহমেদ নূর একবারও প্রশ্ন করেন নাই, কিভাবে টিকে থাকলে? বরং মানুষের মাঝে প্রচারিত হয়েছে অশ্লিল সমালোচনা। পোষাকী কুকুরের তাড়া খেয়ে বেঁচে থাকার জন্য প্রিয় বন্ধুর কাছ থেকে পরামর্শের বদলে ভৎসর্না শোনার ঠিকানা পেয়েছি! সব অপমানের পরে বছরের এই শেষ সময়ে এসে দেখি আমি বেঁচে আছি, মাথা উঁচু করেই বেঁচে আছি। কে আছো কোথায়, দেখে যাও এসে নজমূল আলবাব মরে নাই। আর এই পাঠ আমার কাছ থেকে পূনর্বার শিখে নাও হে বন্ধুসকল প্রত্যাবর্তনের পথে কিছু কস্টলি অতীত থেকে যায়।

এই লেখাটার শিরোনাম নাই। দিতে পারি নাই

বছর দশেক হতে চল্ল... নাহ যুগ পেরিয়ে গেছে। তখন ঢাকা নামের নগরটা আরো অনেক দুরের ছিল। ট্রেনে চড়লে সিলেট পৌছাতে সময় লাগতো সাত/আট ঘন্টা। আর বাসে চড়ার জন্য যথেষ্ঠ সময় হাতে রাখতে হতো। রাতের বেলায় সাহস। নভেম্বরের ২৩ তারিখের ভোর। রাতের বাসে সেই পথ পাড়ি দিয়ে, একটা উলুম্বা পাঠা হৈ হৈ করতে করতে আমার রুমে ঢুকে একেবারে লেপের তলায় সেদিয়ে গেল। লাত্থিগুতা মেরে তাকে নামানো গেলোনা। সে তারস্বরে চেচায়... চিৎকারের ঠেলায় মা নেমে এসে চিল্লা ফাল্লা করে থামালেন। সাফ সাফ বলে দিলাম রোদের যথেষ্ট তেজ না হলে আমাকে যেন সে না ডাকে। কে শোনে কার কথা, পাঠার কাইকুই এর মাঝে কি আর ঘুমানো যায়? অনভ্যাসের সময়ে উঠে দেখা গেল ভ্যামতালাবদমাশটা বিশাল একটা ব্যাগ বয়ে এনেছে, আর তাতে ঠেসে এনেছে মানিক রচনা সমগ্র!!! তিন দশকের অধীককাল বেঁচে থেকে এর চেয়ে মূল্যবান উপহার আর পাইনি। আমার বই এর তাকে রোজ রোজ শোভা ছড়ায় প্রিয় উলুম্বা পাঠা গৌরীশের সেই ঠান্ডা অথচ আবেগী ওমে ভরা ভোরটা... নভেম্বর তেইশের মতো আরো অনেক তারিখ ছিল আমাদের। সারাদিন আমরা বন্ধুরা মিলে শহর সিলেটকে উল্টে পাল্টে গিলে খেতাম সে সময়ে। তারপরে আমাদের নিস্তরঙ্গ জীবনের শুরু হয়েছিল। সকলের

একটা হাবিজাবি রচনা

গত সপ্তাহের পুরোটা সময় কেটেছে দুধের পেছনে। ঘরে দুইটা বাচ্চা। নিজের আর ভাইয়ের। আমাদের পারিবারিক সকল কর্মকান্ড এদের নিয়ন্ত্রনেই আছে। এই উড়ে আসা সরকারে সেনাপ্রধান যতটা গুরুত্বপূর্ণ তারচেয়ে কয়েকগুন বেশি এদের পারিবারিক অবস্থান। সেই দুই ভি ভি আই পি'র খাদ্য সংকট নিয়ে আমর ব্যস্ত, আতংকিত এবং অক্ষম ক্রোধে আক্রান্ত। ১৭/১৮ বছর আগেও আমাদের বাড়িতে গরু পালা হতো। আমরা দুই ভাই আক্ষরিক অর্থেই হাতের কব্জি ডুবিয়ে দুধ খেয়েছি। কিন্তু বাবা-মায়ের সেই পশু প্রীতি কেন যেন আমরা পাইনি। তাই পাশের বাড়িতে থাকতে থাকতে আমাদের শেষ গাভীটি দু তিন মাস আগে মারা গেছে। দুধের এই দুঃসময়ে বার বার এক 'কৃষকমন' আমার ভেতরে তড়পাচ্ছিলো। আমার এই তড়পানি তুলিকে তেমন স্পর্শ করেনি। সে বার বার বলছিলো, আরে এতদিন যখন খাইছে, তাইলে আর কয়েকমাস খেলে কিছু্ই হবে না। কিন্তু সরকার বাহাদুর তাকে আটকে দিলো। বুধবারে মার্কেট থেকে দুধ উধাও। বাবাইকে যে ব্রান্ড দেয়া হয় সেটা সিলেটে যারা বাজারজাত করে তাদের একজনকে ধরলাম। সে বল্লো তাদের কাছে যা ছিল সব ফেরত দিয়ে দিয়েছে। লোকজন কিছুতেই বিশ্বাস করেনা আমি আর আগের মতো ছিদ্র খুজে বেড়াই না। সাংবাদিকতায় ইস্

অক্টোবর ২০০৮

বনবাসে যাওয়া আর হয় না। বনবাসে যাওয়ার সাহস নেই। শেকড় বাড়ছে, শক্ত হচ্ছে। পিছুটান অনেক... মনপুকুরে ডুবে থাকতে শিখেছি সেই কবে। পেরিয়ে আসা কৈশোর থেকে শিখে গেছি ডুব দেয়ার সকল কৌশল। এখন সেই সময় এসেছে, ডুবে থাকার, নিঃশ্বাস বন্ধ করে নিজেকে গোপন করার। অক্টোবর চলে যাবে এ সপ্তাহেই। কি ভয়ঙ্কর সুরেলা মাস ছিলে তুমি প্রিয় অক্টোবর। দেখ আমি এখন আর তোমাকে মনে রাখি না। মাসের শুরু হয়েছে, একটা বোকা মানুষের জন্ম দিয়ে, সাথে একটা বন্ধুও ছিল। টুকু'দা, শুমি কাউকেই বলা হয়না শুভ জন্মদিন। আগের মতো ঘড়িতে আর রাত বারোটা বাজে না বুঝি? অক্টোবরের সকালেও অনেক কুয়াশা থাকে ঘাসের ডগায়। টুকু'দাকে ঘুম ভাঙাতে না গেলে তাকি আর দেখা হয়? শেষের আর মাঝের আটেও আছে জন্মদাগ। সেইসব সময়ে অক্টোবর আসলেই কেমন হয়ে যেতাম... আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে... স্বপনের চায়ের দোকানে বিনিময় হতো ভাব, ভালোবাসা। হাতিরাজের বিরিয়ানিও জুটেছিল মনে হয় কয়েকবার। কানিশাইল জল ও তরঙ্গে মেপে কুল পায়নি বন্ধুতার। বেনোজল ঢুকেছিল কবে মনে নাই আর। মুড়ি মুড়কির মতো ছড়িয়ে পড়লাম কবে সেটা বুঝতেই পারলাম না। বোধহীন হলাম তবে সকলেই? নাকি আমিই শুধু বিচ্ছিন্ন আজ রঙের উৎসব থেকে

আলবাব'র সময় ০৪

ধেয়ে আসছে অশ্লিল আলোর ঝলকানি মৃত জোনাকে ভরে গেছে বড়গুলের মেঠোপথ বড়ো বেশি ম্লান চাঁদ সোডিয়ামের মতো হেপাটাইটিস আক্রান্ত, অসুস্থ দুরে, দুরে, আরও দুরে যতোটা গভীরে যাওয়া যায়, যাও আলবাব, বেঁচে থাকার মতো মধুময় আর কিছু হতে পারে না।

এমন চিঠি আর কেউ লিখবে না...

প্রিয় নজমুল আলবাব, আমার বয়সীরা সাধারণত কনিষ্ঠদের লেখা নিয়ে মাথা ঘামায় না। তাদের লেখা পড়ে না, পড়লেও স্বীকার করতে চায় না, করলেও প্রশংসায় তাদের শব্দের ঘাটতি পড়ে। ব্যতিক্রম হওয়ার জন্যে নয়, আমি সাম্প্রতিক লেখকদের জানতে চাই, তাদের ভাবনা বুঝতে চাই, তাদের কাছে শিখতেও চাই। আদৌ জানা-পরিচয় নেই, এমন অনেকের লেখা পড়ে ভালো লাগলে নিজের উদ্যোগে যোগাযোগ করেছি, এমন ঘটনা খুব বিরল নয়। আপনার লেখা এবং তার অন্তর্নিহিত শক্তি নিয়ে আমার মুগ্ধতা আছে, সে কথা প্রকাশ্যে এবং ব্যক্তিগতভাবেও জানিয়েছি। আপনার কাছে আরো অনেক গাঢ় ও গভীর রচনা পাবো আশা করি। কিন্তু খুব দুঃখের সঙ্গে একটি পুরনো প্রসঙ্গের অবতারণা না করে উপায় দেখছি না। আজকের টম-জেরি গল্পটি আমার যতোটা ভালো লেগেছে, ঠিক ততোটাই ব্যথিত করেছে এর অসংখ্য ভুল বানান ও অসতর্ক বাক্যনির্মাণ। আপনি মনঃক্ষূণ্ণ হলেও আমাকে বলতেই হবে, আমার প্রিয় লেখকের কাছে আমি এটা আদৌ আশা করি না। ব্যস্ত দৈনন্দিন জীবন, বয়স ইত্যাদি অজুহাত আসলে অচল। অবাংলাভাষী আবু সয়ীদ আইয়ুব বাংলা শিখেছিলেন চল্লিশ বছর বয়সে এবং শিখেছিলেন অনেক বাংলাভাষীকে শেখানোর মতো করে। চেক বংশোদ্ভুত লেখক মিলান কুন্ডেরা প্রথম জীবনে লি

মেঘদেখা বালিকা

কি এমন খোঁজ ব্যস্ত রাস্তায় মেঘেদের মতো চঞ্চল চোখে শাহানা, আকাশে আজ তারা নেই, মৃত্তিকায় নেই জল আজ প্রেমহীন সময়ে ঘুঙুর বাঁধা পা নিয়ে খবরহীন উড়ে বিষন্ন পায়রা আজ কোন খবর পাঠাইনি মেঘের আড়ালে তোমার জন্য নিজেই এসেছি, এসো ফুল খেলি... প্রেমহীন প্রথিবীকে আমি আজ শাহানার রঙে রাঙাবো...

স্বপ্নের শুরু হইছে, খুশবো ছড়ালো বলে...

সকাল হয়েছে সবে। আলো ফুটতে শুরু করেছে আকাশে। মহারাণী রিকশায় চড়ে হাসপাতালে রওয়ানা হলেন! সাথে গুণধর রাজপুত্র! শহরের বড় মোড়টাতে এসে হাসপাতালের রাস্তার ব্যাপারে নিশ্চিত হতে একজনকে জিজ্ঞেস করলেন। রিকশা আবার চলতে শুরু করলে আবেগে গদগদ লোকটা রাজপুত্রের জন্য শুভকামনা জানায়। বলে, ভাইয়া ভালো থাকবেন। এরপরেই তার ইচ্ছা জাগে, তাঁদের সাথে যোগ দেয়ার ইচ্ছা। সে পেছন থেকে কাতর কণ্ঠে বলে, আমি আপনাদের সাথে আসি? প্রথমে কোন জবাব আসে না। কয়েক পল পরে, রাণীমা মুখ ফেরান আর তার বিখ্যাত গোলাবী হাসি দিয়ে ইশারা করেন... এটা একটা স্বপ্ন। মহান এক তেলবাজ এই স্বপ্নটা দেখেছেন এবং পরিচিতদের কাছে স্বপ্নটা বর্ণনা করছেন। স্বপ্নের তাবির দেনেওয়ালারা এইটা নিয়া গবেষণায় ব্যাস্ত এখন। সেই পুরনো খেলা আবার শুরু হলো তবে। শোনা যায় হাওয়ায় আবার খেলা জমছে। খুশবো ছড়াবে যে কোন সময়। আবারও ভাইয়ারা ছড়ি ঘোরাবেন, দেশকে আবার ইচ্ছেমতো উল্টে পাল্টে ভেজে খাবেন। আমরা দেখব আর আপ্লুত হবো। স্বপ্ন দেখতে দেখতে লোকজন হাওয়ার সামনে লাইন দেবে। তাদের ঝুলন্ত জিহ্বা থেকে ঝরবে লোভাতুর লালা। এই যদি কথা ছিল, তবে কেন খেলারামের এত খেলা? তবে কেন এত হম্বি তম্বি? সব শালা

একটা দিনলিপি রিস্টোর হইতেছে ফ্রম মেমোরি...

শিমুল আমারে ডান দিকে তাকাতে বলে। আমি কিছুই দেখি না। সে আবার দেখায়। সদ্যই ণূড়ে এ্যালার্ম এর খোমা আবিস্কার করে আমি আপ্লুত অবস্থায় তখন, তাই চোখ বিট্রে করে, শিমুল আমাকে কয়েক হাত টেনে নিয়ে দাড় করিয়ে দেয়, 'হিমু মানি একচেঞ্জ' এর সামনে। আমি চোখ কুচকে তারে জিগাই, এইটার মানে কি? শিমুল বলে, দেখো না বেটা মানি লন্ডারিং করতো আগে, আর সচলে কেমন ভাব নেয়। আমি বলি, ধুর ব্যাটা, একচেঞ্জ করলেই কি মানি লন্ডারিং করে নাকি সবাই? সে আমারে ফু: দিয়া উড়ায়া দেয়ার ভঙ্গি করে বলে, তোমার বয়েস ৪০ না হয়ে ৬০ হওয়া দরকার। আরে এইসব আকাম করত বলেইতে সে ভাগছে... আমি মাথা নাড়াই। কিছুই বুঝি না। অয়নের দিকে তাকাই। দেখি সেও কিছু বুঝে নাই। শিমুলের দিকে তাকাই আবার, বেটা এত পাকলো কেমনে? তারপরে সামনে দিয়া হাটতে হাটতে সে বলে, অপু ভাই তুমি একটু সাদা দুনিয়ার হিসাব বুঝতে শিখ। তোমারে বুঝাইতে বুঝাইতে আমার বয়েস চল্লিশ হতে চল্ল, কিন্তু তোমার কোন উন্নতি নাই! নিজেরে আমার অসহায় লাগে। আমি এত কম বুঝি কেন? সে যাত্রায় শিমুল আমাকে অনেক কিছুই বুঝায়। শাহবাগের মোড়ে নির্মলেন্দুরে দেখায়। আমি বাদাম খাই, আর মাথা নাড়াই। পরে সিলেটে এসে আবার পুরানা কথা তু

মিহিদানাদিনলিপি

পোষাকী হলে একমুখি সড়কেও ঘোরানো যায় চাকা, উল্টোদিকে। সন্তানবতী হলে বউ, ব্লাডি সিভিলিয়ান যায় মাতৃমঙ্গলে, যানজট ঠেলে।

সম্পাদকীয়

জলমগ্ন ভবদহ আরও ডুবুক, ভেসে যায়, যাক সুনামগঞ্জের ফসলি হাওর, খেয়াল রেখো, ঢাকায় স্যুয়ারেজ সিস্টেম যেন ঠিক থাকে। খরায় পুড়ে যাক উত্তর বঙ্গের কোমল মাটি, লিড নিউজ কিন্তু ঢাকার তাপমাত্রা নিয়েই করতে হবে। আর্সেনিকে পচে যাক সিলেটের সখিনা, ভেতরের পাতায় থাকুক, সাবধান থেকো, রাজধানীর বাতাসে যেন আর না বাড়তে পারে সীসার মাত্রা।

ছেলে আমার বড় হবে

জুন মাসের ১ তারিখে বাবাই স্কুলে গেল। সেদিন আমি যাইনি তার সাথে। দু'দিন আগে ভর্তির ব্যাপারে আলাপ করতে গিয়েছিলাম। গাড়িতে ঠাসাঠাসি করে ঘরের প্রায় সবাই। মানে আব্বা, আম্মা, দাদাভাই, তুলি আমিসহ। ভাবী যায়নি বাবা (দাদা ভাই এর ছেলে, আমার বাবা) তখনও ঘুমে ছিল বলে।সে এক বৈরাতি বটে। প্রথম স্কুলে যাওয়ার দিনে বাবাই যখন গাড়িতে উঠে টা টা বাবা বলছিল, আমার বুকে একটা মোচড়ের মতো দিল। মনে হলো ছেলে আমার বড় হচ্ছে বুঝি, তবে বুঝি দুরত্বের সময় এল... কয়েকদিন পরে আমি ওকে স্কুলে নিয়ে গেলাম। ফটকের ভেতরে আম্মা তাকে নিয়ে গেলেন। আমি বাইরে দাঁড়িয়ে। কালো প্যান্ট এর নিচে ইন করে সাদা শার্ট পরা ক্ষুদে ক্ষুদে বাবুদের মাঝে মিশে গেল যখন ও আমার আবার মন খারাপ হলো!!! এসব সময়তো আনন্দ হওয়ার কথা। আমার শুধু মন খারাপ করে কেন? ফেব্রুয়ারীতে বাবাইর জন্ম। এপ্রিল মাসে সম্ভবত আব্বা বড় একটা টাওয়ালে জড়িয়ে বাবাইকে নিয়ে মোটর সাইকেলে চড়ে বসলেন। সেই থেকে বাবাই নিয়মিত মোটর সাইকেল চড়ছে। অবশ্য দুনিয়ায় আসার প্রস্তুতিকালিন সময়টা ধরলে সে মোটর সাইকেলের যাত্রি হিসেবে আরও অনেক সিনিয়ার। আমার আর তুলির প্রিয় বাহন এই দুই চাকার যান। বাবাইর যেদিন জন্ম হলো সে

শুভ জন্মদিন হে সচলায়তন

সচলায়তন এর জন্মদিনে (০১ জুলাই ০৮) লিখেছিলাম এই লেখাটার জন্য আমি ঠিক যোগ্যতরজন নই। কিন্তু জন্মতারিখের বয়েস প্রায় ৪ ঘন্টা হয়ে গেলে বাধ্য হয়েই লিখতে বসা। একটা বাজে, অস্থির এবং মন খারাপ করা সময় ছিল সেটা। ব্যাক্তিগত ভাবে দুঃসময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলাম আমি, দেশ (এখন কি কেটেছে দুঃসময়, প্রিয় স্বদেশ?) এবং আমরা। ব্লগ জীবনের মাস চারেক বয়েস তখন। কিন্তু পুরনো বন্ধুদের কল্যানে নতুন ভাবটা নেই। বরং একটা মুরুব্বি মুরুব্বি ভাব চলে আসে প্রায় প্রথম ব্লগ দিবস থেকেই। বন্ধুদের তৈরি বলয়ে ঢুকে যাই সহজেই। প্রায়ই অস্থির হত সেই বাড়ি। ভাল লাগত না। এমন এক খাইস্টা সময়ে ধুসর গোধুলি একটা লিংক দিয়ে বলে, শান্ত হোন, কিছু একটা হতে পারে। কিন্তু আল্লাহর দোহাই কাউরে বলবেন না। (প্রায় দেড় বছর পর বল্লাম, সমস্যা হবে না আশা করি। তবু কেউ কিছু বল্লে বলিস আমারে, দেবানে হুড়কো!) ভার্চুয়াল জিন্দেগানির সুত্রে গড়ে উঠা বন্ধুতায় আরামবোধ হয়। কিবোর্ড, মাউস আর মনিটর হয়ে উঠে প্রিয় অনুসঙ্গ। ইন্টারনেট কানেকশনটা সবচে প্রয়োজনীয় বলে মনে হয়। একসাথে ভাবতে থাকি, আর কি আশ্চর্য সেইসব ভাবনায় কেমন একাকার হয়ে যায় অনেকে। ব্লগারু বলে একটা গ্রুপে প্রবেশ সেই সূ

বিকেলের রোদে দেখা মেয়ে

রঙিন কাগজে বদলানো যেত ঠোটের রঙ আর সেগুনের কঁচিপাতা ঘসে দিলে হাতে, রাঙানো যেত তারেও। শহুরে চোখে ওরকম গোলাপের ছাপা দেয়া জামা হাস্যকর বটে। তবু আমি অবাক হয়েছিলাম। দুধ আলতা এক করে কখনও দেখিনি, সেইদিন মনে হয়েছিল উপমাটা বুঝি তোমার জন্যই লিখেছিল কেউ। মেঘের বিকেলে রোদ কেমন কোমল হয়ে পড়ে... সেই বিকেলে তুমি না এলে আলবাব রোদ্দুরে মাতাল হতোনা কোনদিন। মেয়ে তোমার বাড়িতে বুঝি অনেক রঙিন কাগজ ছিল? লাল আর গোলাপ রঙের? রোজ সকালে কি তুমি সেগুনের সাথে প্রেম করতে?

পথ চলতি গল্প আর আমি অথবা আমার পথচলা

তবে কি বদলে যাচ্ছি? ভাব ধরা সময়টা পার হতে পেরেছি? মাঝে মাঝে মনে হয়, হ্যা বদল ঘটছে, মাঝে মাঝে মনে হয়, না, হচ্ছেনা। গত সপ্তায় একটা বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে গেলাম। শিক্ষাবিদ প্রফেসর মো। আব্দুল আজিজ এর 'কালের যাত্রার ধ্বনি' গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠান। স্মৃতিচারণ মূলক গ্রন্থ। স্যারের দীর্ঘ জীবনের নানা স্মৃতি উঠে এসেছে পারিপার্শ্বিকতাসহ। প্রায় ছয় মাস পরে এমন একটা অনুষ্ঠানে গেলাম যেখানে আমার সাবেক সহকর্মীরা আছেন। বুদ্ধিবৃত্তিক অনুষ্ঠানগুলো সচেতন ভাবেই বর্জন করছিলাম বেশ কয়েক মাস। তবু গেলাম। তুলির প্রচন্ড আগ্রহ, সাথে নিজেরও কিছু টান ছিল। এই গ্রন্থ শুরু হয়েছিল পত্রিকার পাতায়। আমি সেইসময় সেই পত্রিকার এইসব লেখালেখির বিভাগটা দেখতাম। টুকরো টুকরো লেখা জমে মলাটের ভেতর ঢুকেছে! আরামদায়ক বটে। অনুষ্ঠানে সীমিত মানুষের উপস্থিতি। আয়োজকরা সবার নাম ঠিকানা লিখে নিচ্ছিলেন। আমার সামনে যখন স্বাক্ষরের কাগজটা এলো, পেশা লিখতে গিয়ে লিখলাম 'ব্যবসা'! আমার হাতটা কি একটু কাঁপলো? বুকের ভেতর কি টান পড়লো? এভাবে কি পরিচয় বদলে ফেলা যায়। রাস্ট্র কি এভাবেই নিয়ন্ত্রন করে মানুষের পছন্দ, জীবনের সরল রেখা? ২. হিমন ছবি

হাঁসফাঁস মানুষ ও টম এন্ড জেরি

নতুন কেনা ডিভিডি প্লেয়ারে টম এন্ড জেরির কার্টুন চলে। মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে ছেলে। ততোধিক মুগ্ধতা নিয়ে ছেলেকে দেখে আনোয়ার। ভাতিজার শখ মেটাতে প্লেয়ারের সাথে টম জেরির পুরো কালেকশন নিয়ে এসেছে শফিক । একটার পর একটা এপিসোড আসছে। টিভি দেখতে দেখতে হঠাৎ করেই ছেলের মুখটা করুণ হয়ে ওঠে। আনোয়ারের চোখ এড়ায়না। কিরে বাবা, কি হয়েছে, মন খারাপ করলো কেন, বলে সে আধশোয়া শরীরটা টেনে ছেলের কাছে নিয়ে যায়। বালিশে হেলান দিয়ে বসে থাকা ছেলে বাপকে জড়িয়ে ধরে, 'বাবা হাঁসের বাচ্চাটাকে কেন নিয়ে গেল... ' আনোয়ার টিভিতে চোখ রেখে বোঝে কার্টুন দেখেই ঘটনা ঘটেছে। একটা হাঁস ছানা সেখানে চেঁচামেচি করছে। রিউয়াইন্ড করে বিষয়টা বোঝার চেষ্টা করে সে। দুষ্টু টম জলার ধার থেকে হাঁসের ডিম চুরি করেছে, সেটা থেকে বাচ্চা ফুটেছে, তারপর বাচ্চাকে রোস্ট বানানোর ধান্দায় টমের নানা কিসিমের বিতঙ। হাসি আসার মতো কাণ্ড সব। আনোয়ার ছেলেকে জড়িয়ে ধরে বলেন, এইতো বাবা সব ঠিক হয়ে যাবে, দেখ দুষ্টু টম কেমন জব্দ হয়, একটু অপেক্ষা করো। বাচ্চাদের রেসিপি বানানোতে ওস্তাদ কার্টুনওয়ালা ঠিকই হাসিয়ে দেয় চার বছরের অন্তুকে। সে ফোকলা দাঁত বের করে হাসতে থাকে আর বাবা

আলবাব'র সময় ০৩

বেনোজলে ভেসে যায় ফসলের যৌবন। ভেসে যায় জারুলে ফুল। আমিও ভাসি ইশ্বর ভাসতে শেখায় তাই নজমুল আলবাব ভেসে যায় সনাতনী জল ও কাদায়

আলু পটল সংক্রান্ত দিনলিপি

দরজা লাগাইলেই বউ বদলায়া যায়। ক্ষমতায় গেলে... তুমি মিয়া সকালে ঘুমের ঘোরে বউ গালে হাত দিছে বইলা একেবারে গইলা গেলা! পিরিতি উথলায়া উঠলো। খবরদার বউয়ের গালে গাল ঘসতে যাইওনা। খসখসা দাড়ি লাইগা তার ঘুম ভাঙলে খবর আছে, হুঁ। দরজা লাগাইলে বউ বদলায় এই কথা শুনে গদগদ হওয়ার জামানা শেষ। শব্দটায় যৌনতার ঘ্রাণ থাকলেও এখন আর সেইসব পাওয়া যায়না। দরজার ওইপাশে আম্মা আম্মা ডাইকা গলায় রক্ত তুইলা বউ দরজা লাগায়, তারপর সে আর আম্মা থাকেনা। তোমার আম্মা দিয়া শুরু হয় ঠেকে... পোয়াতিসময়ে যে আম্মা পেটে তেল মালিশ করে দিল সেই আম্মায় রান্ধনের কালে তেল কেন মাইপা দেয় এইটাই হইল বিষয়, সোয়াবিনের লিটার একশ হোক কীবা দেড়শ বউয়ের তাতে কি? আর মায়েরইবা কি? এক লোক কোন দুরদেশে যাইতেছে। (এইটা কিন্তু আগের জামানার কিচ্ছা। নানাজানের কাছ থাইকা শোনা)। পায়ে সুন্দর জুতা, কাঁধে চাদর। রাস্তায় কাদা। পার হওনেরর কোন উপায় নাই। বেশ কিছুক্ষন লোকটা দাঁড়াইলো। তারপর চাদরটা বিছায়া কাদার উপর দিয়া হাইটা গেল। অন্য আরেকজন ঘটনা দেইখা অবাক হয়। প্রশ্ন করে, ভাই এইটা কী করলেন? জবাব আসে, আরে ভাই কাদা থেকে জুতাটা বাঁচাইতে হবেনা। দুইশ টাকা দিয়া কিনছি। সেই লো

আলবাব'র সময় ০২

এমন কিছু করিনি এখনও যে সফলেরা আমাকে একিন করবে। ব্যর্থ মানুষের তকমা এটে গেলে একবার পিঠে আলবাবের আর কিইবা করার থাকে? গান যত গাওয়া হয়েছে এতদিন সব দেখি বেমালুম ভুলে বসে আছি! এইসব মনে রাখতেও সফল মানুষ হতে হয় বুঝি? ধুর, আর এইভাবে বিরহের গীত গাইতে ভাল লাগেনা। আম্মা যে কেন কিছুই বুঝেনা... মাঝে মাঝে আলোর বিন্দু নিয়ে সরু কিছু টানেল থাকে, বিপদগ্রস্থ মানুষেরা সায়রে ভেসে থাকার চেস্টায় খড়কুটো যেমন আকড়ে ধরে তেমনি এই কালে উপদেষ্টারা সেই আলোর পেছনে ছুটেন আর মাইক্রোফোনের সামনে এসে বলেন, আলো দেখতে পাচ্ছি, এইবার হবে বন্ধুগন... আলবাবের একটা খড়কুটো নাই, সরু কোন টানেলও নাই, নাই কোন ভরসার আলোকবিন্দু... এইবার তবে বনবাস...

আজ এইটুকুই সুখ সংবাদ

নিঃশ্বাস বুঝি আটকে যায়। বন্ধ হয়ে যায় একে একে সব চেনা দরজা, জানালা। গতকাল সন্ধায় আবার নাটকের সভা হয়েছে গরম চায়ে মজেছি আমরা পাগলের দল। এইবার তবে মহড়া। ধুপ জ্বেলে পূনর্বার যাত্রা... ইদানিং যিনি এই শহরের বারো জনের একজন তিনি এসেছিলেন, নতুন গাড়ি তার ঝা চকচক সংস্কৃতির এমন বেহাল দশায় তিনি ব্যাথিত, কান্না পায় তার। আমরা আপ্লুত হই ভালবাসায়। ঝুলে পড়তে ইচ্ছে করে গলায়। আপনি সংস্কৃতির আব্বা হবেন এইবার। আসেন গলায় মালা পরেন জনাব বলে নৃত্য করতে ইচ্ছে করে। কিন্তু কিছুই করা হয়না। শুধু ডালপুরি চিবুই। শুধু চা গিলি আর আগামীকাল কফি পাওয়া যাবে এই আশাবাদ শুনি। তিনি এই শহরের বারো জনের একজন তাই তাকে গুরুত্ব দিতেই হবে। তার কথা মন দিয়ে শুনি। যতযাই হোক, আসল কথা হল জানালা বন্ধের জামানা এসে গেছে। নিঃশ্বাস বন্ধ হলে হবে জানালা খোলা যাবেনা দরজাটা একটু ফাঁক করে প্রয়োজন মতো শুধু বলতে হবে ভাল আছি খুব, সুখে আছি। সময়মত টিভি ক্যামেরা পৌছে যাবে আপনার দরজায়। শোক বলবেননা ভুলেও পোষাক পরা ফেরেশতারাও কিন্তু বসে নেই।

বউ বাটা বলসাবান: বিস্মৃত বয়ান

বেশি বেশি ভাব বলে একটা কথা আছে। আমরা প্রায়ই এই কথাটা বলি, পাব্লিকের বেহুদা আচরনকে বুঝাতে। এই মূহুর্তে আমি সেরকম একটা বেহুদা আচরণ অর্থাত্ বেশি বেশি ভাবের কাজ করব। কাজটা আসলে করার কোন কু-ইচ্ছা কখনই আমার ছিলনা। কিন্তু শিমুলিয় অনুরোধে এটা করতে বসলাম। তাছাড়া বেকার দ্যা গ্রেট হিসাবে একটা কাজ অন্তত পাওয়া গেল। বিষয় হল বউ বাটা বলসাবান নামের অতি ক্ষুদ্র গল্পের জন্ম কাহিনী। সবকিছুর একটা সময় আছে। যার জীবনই পাকাপোক্ত হলনা তার আবার জীবনী কি? বউ বাটা বলসাবান কতটুকু গল্প হয়ে উঠতে পেরেছে এই প্রশ্নটারই কোন উত্তর আমার জানা হয়নি আর তার কীনা জন্ম কাহিনী! তবু লিখি। এইসব অবাধ লেখার স্বাধীনতা আছে বলেইতো ব্লগ। হিসাব করলে দশ বছর হয়ে গেছে। এই মূহুর্তে ছাপানো কপিটা হাতের কাছে নেই। থাকলে সেই তারিখটা দেখে নিশ্চিত সময় বলতে পারতাম। সেইসময় সবে আমরা লেখা গুলে খাবার বয়েসে পৌছেছি। নিজেরাই লিখি, নিজেরাই খাই টাইপ অবস্থা। সিলেটে বেশ বড় একটা গ্রুপ আমাদের। আকাম কুকাম অনেক কিছুই করি আমরা। এর ফাঁকে কেউ নাটক করে, কেউ আবৃত্তি করে। আর সব বাঙালির কমন বদদোষ হিসাবে আমরা সাহিত্য চর্চ্চাও করি। গৌরীশ দারুন প্রবন্ধ লিখত। তার পড়ার বিষয় ছি

কয়েকটা দিন অন্যরকম-শেষ

রোববার, ৩ ফেব্রুয়ারি। মেলা নিয়ে আমার অনেক স্মৃতি। শৈশবের বড় একটা সময় আমি মেলায় মেলায় ঘুরেছি। রঙিন সেইসব মেলা। ধল মেলা ( এই মেলাটা বাউল সম্রাট আব্দুল করিমের জন্য বিশেষ ভাবে পরিচিত), মাতারগাওয়ের মেলা, জগন্নাথপুরের বারুনি, ঢাকাদক্ষিনের রথের মেলা বা বারুনি (শ্রী চৈতন্যের স্মৃতি বিজড়িত) আরও কত। এই গতবারই ঘুরে এলাম পনাতির্থ থেকে। আমার জীবনটা নানা রঙে রাঙাতে এইসব মেলার ভূমিকা অনেকখানি। গ্রামবাংলার চিরায়ত মেলা দেখে অভ্যস্তরা নগরের মেলায় কতটা আরাম পাবে? একদমইনা। তাই বাণিজ্য মেলা, তাত বস্ত্র মেলার মত নাগরিক ভিড় আমাকে কখনই টানেনা। আমি অভ্যস্থ পায়ে হাটতে পারিনা। দম বন্ধ হয়। এইসব মেলার রঙবাহার দেখলে আমার হাসি পায়। ঐতিহ্যকে দড়ি বেঁধে মেলার মাঠে দাড় করিয়ে রেখে কর্পোরেট বাণিজ্য। তবু যেতে হয়। বাধ্য হয়েই যাই। ইদানিং কঠোরভাবে গৃহপালিত নজমুল আলবাব মেলায় যান। ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। মা, বাচ্চা, বউ, ভাইয়ের বউ, মামু... বিশাল সে বাহিনি। আমার ছেলেটাকি আমার মতই? কিছুটা মনে হয়। সেও আমার মতই খুব দ্রুত দলছুট হয়ে পড়ে। ভিড়বাট্টায় নিঃসঙ্গ হয়ে একা একা গুটি পায়ে হাটে। তাই বিশাল মেলা মাঠে ঢুকতে না ঢুকতেই আমরা ব

কয়েকটা দিন অন্যরকম-৩

অনেক আত্মীয় স্বজন আছেন যাদের সাথে কোন যোগাযোগই নেই আমার। কালেভদ্রে দেখা হয়। হাই হ্যালো পর্যন্ত সম্পর্ক। ঢাকায় গেলে হোটেল নয়ত বন্ধুর বাড়িতেই থাকতে অভ্যস্থ। কিন্তু এবার আম্মা সাথে। তাই অনেকের সাথেই দেখা হল। বারিধারার জনৈক অতি বড়লোক মামার বাড়িতে যেতে হল শুক্রবার রাতে। বড়লোকদের বাড়িকি খুব ঠান্ডা হয়? আমার কেন যেন এইসব বাড়িকে অস্বাভাবিক শীতল মনে হয়। সারারাত প্রচন্ড শীতে আমি কাবু ছিলাম! তবে সকালটা বেশ ভাল লাগলো। সে বাড়িতে থাকা চমৎকার দুটো পিচ্চির সাথে দারুন সময় কাটলো। দুপুর গড়িয়ে যাওয়ার সময়ে শুদ্ধস্বরে র টুটুল ভাইকে (আহমেদুর রশীদ) ফোন করলাম। বল্লেন, তোমার বইতো এসে গেছে অপু। স্টলে দিয়ে দেবো? না করার প্রশ্নই উঠেনা। বল্লাম, অবশ্যই। একটু পরেই আরিফ ভাইয়ের ফোন। কিরে আজও মেলায় যাবিনা নাকি? বলি, হ্যা যাব। তুমি কখন যাবে? বিকালে শুনে, সেইসময় যাওয়াটা ঠিক করি। ফোন রেখে দেয়ার আগে প্রশ্ন করেন, তোর বইয়ের খবর কি? বল্লাম স্টলে চলে গেছে। আরিফ ভাই স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে ঝাড়ি দেয়। তুই এত পাষাণ হলি কবে? বই মেলায় এসে গেছে আর তুই এখনও মামুর বাসায়? জলদি মেলায় আয়। আমি যাচ্ছি... আগেই বলেছি ঢাকায় আমি অন্ধ মানুষ। ড্রাইভাররা

কয়েকটা দিন অন্যরকম-২

শুক্রবার। ফেব্রুয়ারির এক তারিখ। আমার বাবাইসোনার জন্মদিন। বারটা বাজতেই তুলির মোবাইলে মেসেজটোন। মিঠুর মেসেজ। অনন্তমৈথুন নাম দিয়ে সে ব্লগায়। প্রিয় বুলবুলিকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছে। সে বাবাইকে বুলবুলি বলবে। আর বাবাই তাকে বলবে বন্ধু। ফোন হাতে নিয়ে যখন মেসেজ পড়ছি, বাবাই আগ্রহ নিয়ে জিঙ্গেস করে কে ফোন করেছে বাবা? আমি বলি তোমার বন্ধু তোমাকে হেপি বাড্ডে বলেছে সোনা। সে হাততালি দিয়ে নিজেই বলে উঠে, হেপিবাড্ডে তু ইউ, হেপি বাড্ডে ডিয়ার তমাল, হেপি বাড্ডে তু ইউ... সবাই হেসে উঠেন। বাবাই শরম পায়। শুক্রবার সকালটা সবসময়ই অন্যরকম। কেমন এক অলস ভাললাগা ব্যাপার। ঢাকায় এই একটা সময়ই শুধু আমি কিছুটা উপভোগ করি। বাকিটা... বউ বাচ্চা নিয়ে বেরুলাম। গন্তব্য ধানমন্ডি। ফুপু শ্বাশুড়ির বাড়িতে বেড়াতে গেলাম। বাবাই মহা উৎসাহ নিয়ে রাস্তা দেখা শুরু করল। নানা প্রশ্ন আর আলাপে মুখে যেন খই ফুটছে তার। ধানমন্ডির ঠান্ডা ঠান্ডা সেই বাড়িটায় বিকেল হয়ে যায়। আরিফ ভাই ফোন করেন। কিরে মেলায় যাবিনা। কোথায় আছি জেনে বলেন, ঠিক আছে, এ বাড়ি বেড়ানো শেষ করে বলিস, একসাথে যাব। কিন্তু শেষ আর হয়না। ভাবির ফোন। তোমরা আসনা কেন? বরযাত্রি যাবার সময় হয়ে

কয়েকটা দিন অন্যরকম-১

৩০ জানুয়ারি দুপুরের দিকে মাইক্রোবাস কনফার্ম করেছিলাম। ৩১ এর দুপুরে বাসায় যাবে এমন কথা ছিল ড্রাইভারের সাথে। সেই কথা সে বেমালুম চেপে গেল পরদিন দুপুরে। ১ টায় গাড়ি থাকবে বাসার সামনে। আর আমি ফোন করলাম সোয়া ১ টায়। সে তখনও স্ট্যান্ডে দাড়িয়ে। বাড়ি নাকি চিনতে পারছেনা। কি আর করা, দৌড়ালাম। সামনে পেয়ে অন্যকথা বলে। তার ঢাকায় যেতে সমস্যা!!! মাথা ভন ভন করে উঠে। কদাচিৎ গালমন্দের দরকার পড়ে। নয়ত এখন ঝদ্রস্ত জীবনই বলা যায়। ভদ্রতায় ছেদ পড়ল। কষে থাপ্পড় দিতে ইচ্ছে হলেও সে পর্যন্ত আর যাওয়া হলনা। তাজুল মিয়া নামের জনৈক ড্রাইভার উদয় হলেন ঘটনাস্থলে। তাকে পথ দেখিয়ে দেখিয়ে আমি আমার সিডি ৮০ তে টান দিলাম। দুপুর একটায় বেরুব কথা ছিল, সেই যাত্রা শুরু হল আড়াইটায়। দেড়ঘন্টার এই দেরিটার জন্য মাথায় রক্তচাপ বেড়েছে দ্বিগুন। গাড়িতে বসেই আবার ফোন দিলাম মান্যবর ড্রাইভারকে। আরেকপ্রস্ত অমৃত বর্ষন করলাম তার কানে। তিন বছর হল বাবাইর। এই প্রথম সে আমার সাথে কোথাও যাচ্ছে! মনে হতেই কেমন কেমন লাগা শুরু হল। গাড়িতে ধুমাধুম চক্কর দিচ্ছে সে। একবার মায়ের কাছে বসেতো আরেকবার দাদুর কোলে। আরেকবার ডাক্তার দাদার কাছে (আমার মামা)। আমাকেও বঞ্চিত করছেন

শুভ জন্মদিন বাবাইসোনা

সেদিন প্রকৃতি আমাকে রেখেছিল নিরাপদ দুরত্বে। আমি কিছুই টের পাইনি, অন্তত শরিরে। সত্যিইকি তাই? একেবারেইকি টের পাইনি? মনে হয় পেয়েছিলাম। কেমন এক দুরু দুর বুক প্রতিক্ষা ছিল সেদিন সন্ধায়। বাবার সামনে আমি হাটছি, আধো অন্ধকার হাসপাতালের করিডোর। বাবার সামনে আমি! আমিও বাবা হব! কেমন এক অনুভূতি। শীত ছিল তবু ঘামে ভিজে জবুথবু ... আজ তিন বছর হল। এখনও চোখ বুজলে সেদিনটা মনে ভাসে। এখনও যখন আধো আধো বুলিতে তুমি ডাক দাও ‘বাব’ কেমন অবাক লাগে। আমিও তবে বাবা হলাম। আমাকেও কেউ একজন বাবা বলে ডাকে! শুভ জন্মদিন বাবাই সোনা। শুভ জন্মদিন। তুলিকে অশেষ ধন্যবাদ, সব কষ্ট নিজে সয়ে আমাকে এমন চমৎকার উপহার দেয়ার জন্য। তোমার কাছে কৃতজ্ঞ। লেখা হয় সচলায়তনে। ১ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ http://www.sachalayatan.com/albab/12117

শুভ জন্মদিন রনি ভাই

আমার দেখা হল কবে তার সাথে? ১৯৯৪/৯৫ সাল মনে হয়। তবে শীতের দিন, না রাত ছিল সেটা। এবং রোজা ছিল। ঈদের আগের রাত। বন্দরবাজারের আলুপটলময় জঙলায়। দাদাভাই আমারে নিয়া গেছে জুতা কিনা দিতে। ঈদের জুতা। সেই এলাকায় তখন সিলেটের বিখ্যাত করিম উল্লাহ সু স্টোর। আতকা দেখি পান্ডামত এক পোলা সেখানে হাজির। ইয়া লম্বা। কালো একটা লেদার জ্যাকেট গায়ে। সেই জ্যাকেটে আবার দুনিয়ার ট্যাগ, ব্যাজ এইসব লাগানো! দেখেই আমার একটা বদ ধারণা হল। সে দেখি আবার কথা বলে দাদার লগে কথা বলে, ওই টিপু কই আইছস! আমি কই হালার দাদায় দেখি ইদানিঙ পান্ডাগো লগে চলে! জুতা কিনা দিতে গেছে শুনে বলে, এই তুই জলদি মধুবনে যা, সুন্দর জুতা নিয়া আসছে একটা দোকানে। আমি কই আরে বেটায় দেখি আবার খবরও ফেরি করে! তবে কন্ঠটা বেটার গোন্ডাপান্ডা টাইপ না :) বাচ্চা বাচ্চা... আমরা দুই ভাই মধুবনে যাই। দাদারে জিজ্ঞেস করি এইটা কে? সে পাল্টা জিগায়, কেন? আমি বলি পান্ডাদের মত লাগে! দাদা শুধু হাসে... এই পান্ডা লোকটার লগে আমার পরে খাতির হয়ে গেল। মহা খাতির। এমনকি দাদাভাইয়ের চাইতেও বেশি কোন কোন ক্ষেত্রে! আমারে তিনি বড়ভাই ডাকা শুরু করলেন! আমিও তারে বড়ভাই ডাকি। উচ্ছাসের বৈশাখী আয়োজনে

বিভিন্ন মিতভাষণ

বাগানের নির্জনে পেয়ারা গাছটার জন্ম; আমাদের সবার অগোচরে। গাছটা যেদিন প্রথম ফুল দিল, তার মাস দু-এক আগে মা এটা আবিস্কার করেছিলেন।আসলে মা নয়। পাশের বাড়ির করম আলী চাচাকে আনা হয়েছিল আমাদের বাড়ির জঙ্গল সাফ করার জন্য। তিনিই মাকে দেখিয়েছেন গাছটা। কিন্তু আমরা করম আলী চাচার কথা বলিনা। বলি মায়ের কথা। আর মাও সেটা নির্দ্বিধায় স্বীকার করেন সেটা। ভাইয়া তার কম্পিউটারে একটা গেম তৈরি করছে। ও প্রোগ্রামার নয়। কম্পিউটারের কাজ যে খুব জানে তাও নয়। তবে চেস্টা করছে। ... ভাইয়ার সিনিয়ার ফ্রেন্ড আশফাক ভাই। ফিজিক্স নিয়ে মাস্টার্স করছেন। আশফাক ভাইরা আমাদের মত নয়। কস্ট করে লেখাপড়া করছে। কম্পিউটারে ওর আনেক কাজ। কিন্তু নিজের কম্পিউটার নেই। তাই ভাইয়াকে বলে সপ্তাহে দু-তিনদিন নিজের কাজ করে নেয়। আশফাক ভাই যেদিনই আসে ভাইয়া কথার ফাঁকে হঠাৎ বলে, ‘আশফাক ভাই আমার গেমটা একটু দেখে দিননা।’ আশফাক ভাই বাধ্য ছেলের মত দেখতে বসে। তখন ভুরি ভুরি ভুল বেরোয়। তিনি তখন গেমটা নতুন করে তৈরি করতে বসেন। এভাবে পুরো গেমটাই তৈরি হচ্ছে। আমি, আমরা জানি ভাইয়া কিছুই পারছেনা; তবু সেটা কাউকে বলিনা। আমার বন্ধু মীরু। যে ভাইয়ার জন্য পাগল। তার কাছে গ