অলৌকিক বৃষ্টির পর

কথা হয়েছিলো, বসন্তের মাঝামাঝি যখন এ

শহর সবুজ হয়ে উঠবে, যখন সড়ক দ্বীপ থেকে

হাত বাড়াবে নানান রঙের ফুল, আমরা তখন

হাঁটতে বেরুবো।


শীত লেগে জমে থাকা সাইকেলের প্যাডেল

আবার ঘুরবে দারুন জোরে। বাতাসের ঝাপটায়,

ভুল করে রয়ে যাওয়া পুরনো পাতাটি টুপ করে

ঝরে পড়বে গাছ থেকে।


বিগত শীতের চিহ্ন ধরে রাখা ভোরে, পাতলা শাল জড়িয়ে বেরিয়ে পড়লে আম্মা তোমাকে একটা সোয়েটার এগিয়ে দেবেন। দরগার পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে আব্বা মুচকি হাসবেন।


আমাদের ছেলেরা লাল চায়ের কাপ সামনে নিয়ে বসে থাকবে। বাড়ি ফিরে গেলে অভিমানে গাল ফোলাবে। দেরি হলো বলে তুমি কিশোরীর মতো লজ্জা পাবে।


ইমাম সাহেব বাড়ীর সামনে দিয়ে যেতে যেতে হাক দিয়ে বলবেন, 'ও কারীব আইজ মাদানে তুমাতান বাড়ীত খাওয়াত আইমু।' তিন শিশু দৌড়ে শিউলি তলায় গিয়ে হাত নাড়বে।


হাজেরা গরম গরম রুটি নিয়ে এসে বলবে, মামা 'জলদি খান, পরে শক্ত ওইযাইবো।' আম্মা বলবেন, 'ও ফুড়িন আইজনু শুক্কুরবার, ভালামন্দ রান্দার ব্যবস্থা করো।'


হঠাৎ নেমে আসা অলৌকিক বৃষ্টিতে সব ধুয়ে মুছে যাবার পর যে টলটলে রোদ আসবে। আকাশ যখন আরো বেশী নীল হবে, জল হবে আরো স্বচ্ছ, তখন যে ফাগুন আসবে প্রথম, তুমি আমার তিন ছেলেকে নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে দরগার পাশ দিয়ে যেও। আমি আর আব্বা দুধ চা খেতে খেতে তোমাদের দেখবো। হাসবো।

১০/০৪/২০২১

Comments

Popular posts from this blog

বিহঙ্গ হয়েছে অন্ধ, বন্ধ করেছে পাখা

ম্লান আলোয় দেখা টুকরো শৈশব ০২

মিহিদানা