পুরনো গল্প ২

বাবার একটা আলাদা রুম ছিলো। দাদাজান যখন বাড়ি বানান, বাবা তখন যুবক। ছেলের জন্যে আলাদা একটা রুম বানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। সেই ঘর ঠাসা ছিলো নানান রকমের বই এ। বাবা সেই ঘরে ডুব দিলেন। বড়দা এক রাতে ট্রেন ধরার জন্যে যখন বাড়ি ছাড়ছিলো, তার আগে বাবার সাথে দেখা করার জন্যে গেলো সেই রুমে। বাবার সাথে কি কথা হয়েছিলো বড়দার সেটা আমরা জানি না। এই কথা শুধু মনে আছে, বড়দা বেরিয়ে এসে আর দাড়ায়নি। হন হন করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলো। আমি পেছন পেছন সাইকেল নিয়ে বেরুলাম। দাদা সেটা চালিয়ে স্টেশনে গেলো। রাস্তায় কোন কথা হয়নি দু’ভাইয়ে। স্টেশনে ঢুকার মুখে, আমার হাতে পঞ্চাশ টাকার একটা নোট গুজে দিয়ে বল্লো, একটা পেডলক কিনিস সাইকেলের জন্যে। তারপর দু কদম এগিয়ে গিয়ে আবার ফিরে এসে বল্লো, 'টুটুল, বাবাকে দেখে রাখিস সোনাভাই। বাবা খুব কষ্টে থাকেরে...' দাদার চোখে টলটল করছিলো পানি, সাইকেল চালাতে চালাতে মুছে ফেলছিলো যা, এইবার আর সেটা করলো না। টপ টপ করে গাল বেয়ে নেমে আসে ...
সাইকেলের প্যাডেল ঘুরাতে ঘুরাতে অবাক হই, সেই প্রথমবার আমি রাত দশটায় একা বাড়ি ফিরি। সেইদিন থেকে আমি বড়ো হতে শুরু করলাম।

Comments

Popular posts from this blog

বিহঙ্গ হয়েছে অন্ধ, বন্ধ করেছে পাখা

ম্লান আলোয় দেখা টুকরো শৈশব ০২

মিহিদানা