কয়েকটা দিন অন্যরকম-১

৩০ জানুয়ারি দুপুরের দিকে মাইক্রোবাস কনফার্ম করেছিলাম। ৩১ এর দুপুরে বাসায় যাবে এমন কথা ছিল ড্রাইভারের সাথে। সেই কথা সে বেমালুম চেপে গেল পরদিন দুপুরে। ১ টায় গাড়ি থাকবে বাসার সামনে। আর আমি ফোন করলাম সোয়া ১ টায়। সে তখনও স্ট্যান্ডে দাড়িয়ে। বাড়ি নাকি চিনতে পারছেনা। কি আর করা, দৌড়ালাম। সামনে পেয়ে অন্যকথা বলে। তার ঢাকায় যেতে সমস্যা!!! মাথা ভন ভন করে উঠে। কদাচিৎ গালমন্দের দরকার পড়ে। নয়ত এখন ঝদ্রস্ত জীবনই বলা যায়। ভদ্রতায় ছেদ পড়ল। কষে থাপ্পড় দিতে ইচ্ছে হলেও সে পর্যন্ত আর যাওয়া হলনা। তাজুল মিয়া নামের জনৈক ড্রাইভার উদয় হলেন ঘটনাস্থলে। তাকে পথ দেখিয়ে দেখিয়ে আমি আমার সিডি ৮০ তে টান দিলাম।
দুপুর একটায় বেরুব কথা ছিল, সেই যাত্রা শুরু হল আড়াইটায়। দেড়ঘন্টার এই দেরিটার জন্য মাথায় রক্তচাপ বেড়েছে দ্বিগুন। গাড়িতে বসেই আবার ফোন দিলাম মান্যবর ড্রাইভারকে। আরেকপ্রস্ত অমৃত বর্ষন করলাম তার কানে।

তিন বছর হল বাবাইর। এই প্রথম সে আমার সাথে কোথাও যাচ্ছে! মনে হতেই কেমন কেমন লাগা শুরু হল। গাড়িতে ধুমাধুম চক্কর দিচ্ছে সে। একবার মায়ের কাছে বসেতো আরেকবার দাদুর কোলে। আরেকবার ডাক্তার দাদার কাছে (আমার মামা)। আমাকেও বঞ্চিত করছেনা। আহারে, ছেলেটা কি হমৎকার কান্ডকারখানা করে, আর আমি তা থেকে নিয়মিত বঞ্চিত হই...

এতবছর ধরে ঢাকা যাই, তবু শহরটা আমার কাছে চরম অচেনা, বিরক্তিকর। টেক্সিওয়ালা আর রিকশাওয়ালা না থাকলে সেখানে চলা আমার জন্য দুস্কর। এই আমাকে যদি মাঝপথে এসে শুনতে হয় টঙ্গি হয়ে শহরে ঢুকতে হবে, তখন কেমন লাগে? কাজটা করলেন আমার ভাই। মোবাইলে তিনি ইনস্ট্রাকশন দিলেন, মেলার কারনে বিজয় স্মরনিতে মহা জ্যাম। মিরপুর যেতে যেতে রাত ১২টা বেজে যাবে। টঙ্গি হয়ে যেন গাড়ি যায়। আমি বল্লাম রাস্তা আমি চিনিনা। সে বলে তোর চেনার দরকার নাই ড্রাইভার চিনবে। ওরে ফোন দে। সে ড্রাইভারের সাথে কথা বলে। আম্মা, তুলি, মামা সবাই বলে রাস্তাটা নাকি তারা চেনে। আগেও গিয়েছে। সমস্যা নাই। কি আর করা, চলুক গাড়ি...

নানা রাস্তা পেরিয়ে মিরপুরের রুপনগরে যখন পৌছলাম রাত তখন এগার। সাথে থাকা তিন পিচ্চি ঘুমের কোলে। নিজের শরিরটাও বেশ দুর্বল।

Comments

Popular posts from this blog

বিহঙ্গ হয়েছে অন্ধ, বন্ধ করেছে পাখা

ম্লান আলোয় দেখা টুকরো শৈশব ০২

বিকেলের রোদে দেখা মেয়ে